রাষ্ট্রসংঘের প্যালেস্তাইন সংক্রান্ত দপ্তরের প্রধানকে গাজায় ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল ইজরায়েলী সেনার বিরুদ্ধে।
ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্তাইন রিফিউজিস ইন দ্যা নিয়ার ইস্ট বা ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান ফিলিপ্পে লাজ্জারিনি সোমবার বলেছেন, ‘‘আমি আজ রাফায় যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি জানতে পারি, ইজরায়েলী সেনা আমায় অনুমতি দেয়নি।’’
এর অভিযোগের কোনও প্রতুত্তর মেলেনি ইজরায়েলী সেনার তরফে। যদিও ইজরায়েল সরকারের মুখপাত্র আভি হাইমান সংবাদসংস্থা এএফপি’কে বলেছেন, ‘‘আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য, ইউএনআরডব্লিউএ হামাসের গণসংগঠন।’’
লাজ্জারিনি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘‘দুর্ভিক্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে গাজা। মে মাসের মধ্যে যে কোনও সময়ে গাজায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। গাজার ২০ লক্ষ জনসংখ্যার প্রায় পুরোটাই চরম খাদ্য সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে। গাজা ভূখন্ডের অর্ধেক জনসংখ্যার মজুদ খাবার শেষের পথে। এর আগে রাষ্ট্রসংঘের অপর সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছিল, গাজার ২ বছর কিংবা তারও কম বয়সী শিশুদের অপুষ্টির হার বাড়ছে। খিদে এবং পেটের রোগে শিশুদের মৃত্যুর হার বাড়ছে।’’
লাজ্জারিনি বলেছেন, ‘‘গাজায় কাজ করা সর্ববৃহৎ ত্রাণ সংস্থা হল ইউএনআরডব্লিএ। সেই সংস্থার প্রধান হিসেবে আমি গাজায় ঢুকতে চাইছিলাম, যাতে ত্রাণের প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে চালানো যায়। মানুষের তৈরি এই কৃত্রিম খাদ্য সঙ্কট গোটা মানব সভ্যতার কাছে লজ্জার। ইতিমধ্যেই অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অবিলম্বে গাজা সীমান্তের সমস্ত চেকপোস্ট খুলে দেওয়া হোক। রাজনৈতিক সদিচ্ছার মাধ্যমে দুর্ভিক্ষ এড়ানো সম্ভব।’’
৭ অক্টোবর থেকে গাজায় সংঘর্ষ চলছে। ইজরায়েলের হামলায় ৩১ হাজার ৭২৬ জন প্যালেস্তিনীয় প্রাণ হারিয়েছেন। ৭০ হাজারের বেশি মানুষ আহত। অবরুদ্ধ ভূখন্ডের সমস্ত নাগরিক পরিকাঠামো এবং হাসপাতাল গুড়িয়ে দিয়েছে ইজরায়েলী সেনা। গাজায় প্রবেশের সমস্ত পথ বন্ধ করে দিয়েছে ইজরায়েল। ঢুকতে দেওয়া হচ্ছেনা খাবার সহ অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী। তারফলে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষের মুখে দাঁড়িয়ে গাজা।
লাজ্জারিনির পাশাপাশি গাজার পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতির প্রধান জোসেফ বোরেল। তিনি বলেছেন, ‘‘যুদ্ধের আগে বিশ্বের বৃহত্তম কারাগার ছিল গাজা। এখন তা বিশ্বের বৃহত্তম কবরস্থানে পরিণত হয়েছে।’’
বেলজিয়ামের ব্রাসেলস শহরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে বোরেল বলেছেন, ‘‘গাজায় হাজার হাজার মানুষের মৃতদেহের পাশাপাশি মানবাধিকার আইনের মূল নীতিগুলিকেও কবর দেওয়া হয়েছে।’’
Comments :0