ধর্ম বদলাতে হলে দু’মাস আগে চিঠি দিয়ে জানাতে হবে জেলাশাসককে। ধর্মান্তরের আয়োজনককেও দিতে হবে চিঠি। তা না করে ধর্ম বদলানোর অনুষ্ঠান করলেই শাস্তি পেতে হবে। আয়োজককে তিন থেকে পাঁচ বছর কাটাতে হবে জেলে। সঙ্গে দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও।
মধ্য প্রদেশের বিজেপি সরকারের এমন আইনকে ছাড় দিতে রাজি হলো না সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানির সময় বিচারপতি এমআর শাহ বলেছেন, ‘‘সব ধর্মান্তকরণই অবৈধ নয়।’’
মধ্য প্রদেশ হাইকোর্ট আইনের ১০ নম্বর ধারাকে ‘প্রাথমিকভাবে অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে স্থগিতাদেশ জারি করে ১৪ নভেম্বর। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে স্থগিতাদেশ খারিজের আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে মধ্য প্রদেশ সরকার। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। আইনের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে বিচারপতিদের কড়া প্রশ্নের মুখেও তাঁকে পড়তে হয়েছে এদিন।
তবে, সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের দায়ের করা বিশেষ আবেদনের ভিত্তিতে নোটিশ জারি করেছে। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল যে ধর্ম বদলানোর জন্য জবরদস্তি কে কাউকে ঘোষণাপত্র দিতে বাধ্য করা সংবিধানসম্মত নয়।
আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা ১০(১), (২) ‘প্রাথমিকভাবে অসাংবিধানিক’ বলে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল মধ্য প্রদেশ হাইকোর্টের বিচারপতি সুজয় পল এবং প্রকাশ চন্দ্র গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। গত ১৪ নভেম্বরের রায়ে আদালত বলেছিল, ধর্মান্তরের ক্ষেত্রে জেল বা জরিমানার মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থেকে নাগরিককে সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। এই অভিযোগে প্রাপ্তবয়স্ক কোনও নাগরিকদের বিরুদ্ধে মামলা না করার জন্য রাজ্যকে নির্দেশও দেয় হাইকোর্ট। বিচারপতিরা বলেন, কেউ যদি নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করে তবে তাকে কোনোভাবেই যেন অপদস্থ না করা হয়।
‘লাভ জিহাদ', জোর করে ধর্ম বদলানোর মতো প্রচার সামনে রেখেই ভোট লড়ে বিজেপি। বিজেপি পরিচালিত মধ্য প্রদেশের পাশাপাশি উত্তরাখণ্ড, উত্তর প্রদেশ, গুজরাটের মতো রাজ্যেও এমন আইন পাশ করা হয়েছে। সেগুলির সাংবিধানিক বৈধতায় প্রশ্ন তুলে একাধিক আবেদনও জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
সোমবারই উত্তরাখণ্ডের একটি মামলায় আবেদনকারীরা প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে বক্তব্য জানান। আবেদনে বলা হয়েছে, সংবিধানের ধর্মপালনের স্বাধীনতার অধিকার, প্রাপ্তবয়স্কের নিজের পছন্দে সঙ্গী নির্বাচনের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এমন আইনে। আদালতের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্যই।
Comments :0