বিহারের নালন্দায় রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদাবিক হিংসার ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২০ জনকে। বিহার শরিফের লেহারি থানায় শুক্রবার রামনবমীর মিছিল ঘিরে হিংসা ছড়ায়।
নালন্দা এবং সাসারাম, বিহারের দুই জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
শনিবার নালন্দা জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন হিংসায় কমপক্ষে ১৪ জন আহত। শুক্রবার রামনবমীর মিছিল বের হয়। অভিযোগ, মিছিল থেকে ইট পাটকেল ছোঁড়া হয়। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা ছয়টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই রামনবমীকে ঘিরে হানাহানির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রায় সর্বত্র মিছিলে আরএসএস’র অনুগামী সংগঠনগুলি আয়োজনকের ভূমিকায়। অস্ত্র হাতে মিছিলে সংখ্যালঘুদের হুমকি কেবল দেওয়া হচ্ছে তা-ই নয়। মিছিল যাচ্ছে স্থানীয় কোনও মসজিদ বা মাজারের রাস্তায়। মুসলিমদের উপাসনাস্থলের সামনে তীব্র প্ররোচনা ছড়ানো হচ্ছে।
সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও’তে বলা হচ্ছে সাসারামের মসজিদের দৃশ্য। দেখা যাচ্ছে রামনবমীর মিছিল থেকে মসজিদের সামনে গিয়ে নাড়ানো হচ্ছে গেরুয়া পতাকা। আরেকটি ভিডিও’তে দেখা যাচ্ছে জ্বলছে আগুন। পোস্টে বলা হয়েছে মসজিদের ভেতরে আগুন লাগানো হয়েছে।
শুক্রবার সাম্প্রদায়িক হিংসার পর নালন্দা এবং সাসারামে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। নালন্দা পুলিশের এসপি অশোক মিশ্র সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করেছেন কোনও প্ররোচনায় পা না দিতে এবং শান্তি বজায় রাখতে।
নালন্দার সরদার হাসপাতালের চিকিৎসক বিশ্বজিৎ কুমার সংবাদসংস্থা’কে জানিয়েছেন, আহত ১৪ জনকে মধ্যে তিনজনকে পাটনায় পাঠানো করা হয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে শুক্রবার রামনবমীর মিছিল চলাকালিন বিহার শরিফের গগন দিওয়ান অঞ্চলে হিংসা হয়। দুই গোষ্ঠী একে অন্যের দিকে পাথর ছোঁড়ে। গাড়ি ভাঙচুরও করা হয়। ২০ জনকে গ্রেপ্তার করলেও রাস্তার ধারে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তে নামছে নালন্দা পুলিশ।
শুক্রবার সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক এবং পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম কলকাতায় মনে করিয়েছিলেন যে রামনবমী এমন সংঘর্ষের চেহারা অতীতে নিত না। সঙ্ঘ রিবারের নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় এমন উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘উৎসব মানে কোন উপাসনা কেন্দ্রে বা মণ্ডপে মিলিত হয়ে তা পালন করা, প্রার্থনা করা। কিন্তু আরএসএস রাম নবমীর নামে মসজিদের দিকে অস্ত্র হাতে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে মিছিল করে।’’
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার আসীন হওয়ার পর থেকে বছর রামনবমীর দিনটিতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রে আরএসএস, বজরঙ দল, হিন্দু সেনার মতো একাধিক উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নাম উঠে এসেছে।
Comments :0