বিজ্ঞানে স্নাতক হয়েও কাজের আকালে নিতে হয়েছিল হোটেলের কাজ। পাড়ি দিতে হয়েছিল ভীন রাজ্যে। কিন্তু তাতেও মিটছিল না পেটের খিদে। নিতে হয়েছিল দেশ ছাড়ারই কঠোর সিদ্ধান্ত। আর তারজন্য তোড়জোর করতে কলকাতা যাতায়াত করতে হচ্ছিল নিয়মিত। বিদেশে পাড়ি দেওয়ার জন্য এই তোড়জোরের মাঝেই শরীরে থাবা বসায় ডেঙ্গুর জীবাণু। তাতেই শেষ হয়ে গেল এক তরতাজা প্রাণ। মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়সেই প্রাণ হারালেন বীরভূমের লোহাপুরের যুবক মুসাব্বির আলম।
লোহাপুরের বারা গ্রামের তারাহাট পাড়ার অকালে চলে যাওয়া এই যুবক কাজের জন্য জন্য যেমন ছিলেন দিশাহারা, মৃত্যু শয্যাতেও তাকে পোহাতে হয়েছে চূড়ান্ত ঝক্কি। পরিবারের দাবি, জ্বর, মাথা ব্যাথায় কাতর হয়ে যুবকের চিকিৎসা হয় স্থানীয় হাসপাতালে। তবুও স্বস্তি মেলে নি। নিয়ে যাওয়া হয় রামপুরহাট মেডিকেল কলেজে। অবনতি হয় শরীরের। এরপর শারিরীক অসুস্থতায় ছটফট করা যুবককে নিয়ে দিশাহারা পরিবার নিয়ে যায় কলকাতার বেহালায় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ওঠে।
যুবকের সঙ্গে থাকা পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, আইসিইউ-রাখা হয়েছিল। কিন্তু কি চিকিৎসা হচ্ছে, ওষুধপত্র বা টেস্ট ইত্যাদি কি হচ্ছে সবটা নিয়েই ছিল ধোঁয়াশা। এতকিছুর পরেও অবস্থার নূণ্যতম উন্নতি না হওয়ায় মুসাব্বির নার্সিং হোমের শয্যাতেই চিৎকার চেঁচামেচি করেন। এরপর আমরা তাকে অনত্র নিয়ে যেতে চাইলে নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করতে থাকে। আমরা চরমভাবে বললে তবেই কর্তৃপক্ষ রোগীকে রিলিজ দেয়।
জানা গেছে, নার্সিং হোম থেকে বের করে মুসাব্বিরকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি সরকারি হাসপাতালে এবং শেষমেস গত মঙ্গলবার সেখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পিজি হাসপাতাল। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয় নি। বুধবার ভোরবেলা সেখানেই তার মৃত্যু হয়। ওইদিনই রাতে হয়েছে গ্রামে মৃতদেহ নিয়ে এসে হয়েছে যুবকের শেষকৃত্য। বৃহস্পতিবার সকালে গোটা গ্রাম ডুবেছিল শোকে।
Comments :0