বয়স তার তেরো। সুস্থ শরীরে ছটফটানির অভাব ছিল না। সেই অ্যালিজার শরীরেই বাসা বেঁধেছিল লিউকোমিয়া। জৈব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। কারণ চালু কোনও পদ্ধতিতে সেরে ওঠার আশা ছিল না।
লেসেস্টারের গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, আপাতত বিপদ নেই কিশোরীর। কেবল অ্যালিজারই নয়, নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি আরও অনেক রোগ মোকাবিলার দিক খুলে দিতে পারে।
হাসপাতালের চিকিৎসক এবং গবেষকরা জানিয়েছেন, বিরল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় অ্যলিজা। পরিভাষায় ‘টি-সেল লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকোমিয়া’। চিকিৎসায় জিন প্রযুক্তি কাজে লাগানো হয়েছে।
হাসপাতালের অন্যতম চিকিৎসক-অধ্যাপক জিন থেরাপি বিশেষজ্ঞ ওয়াসিম কাসিম বলেছেন, ‘‘শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থার অংশ টি-সেল। কিন্তু অ্যালিজার ক্ষেত্রে এই কোষ অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছিল। এই কোষগুলি আক্রান্ত ছিল। বাইরে থেকে জিন প্রযুক্তিতে পরিবর্তিত সুস্থ ‘টি-সেল’ দেহে ঢুকিয়ে চিকিৎসা হয়েছে।’’
কাসিম জানাচ্ছেন, এই চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা চলছিল তাঁদের প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু প্রয়োগ করার সমস্যা ছিল। অ্যালাইজার ক্ষেত্রে আর কোনও পথ ছিল না। ওর ওপরেই পরীক্ষা করতে হয়েছিল।
চিকিৎসকা জানিয়েছেন, ছয় মাস পরীক্ষার পর এখন অ্যালাইজার দেহে ক্যান্সারে আক্রান্ত ‘টি-সেল’ মিলছে না। তবে নিঃসংশয় হওয়ার উপায় নেই। সর্বদাই ওকে নজরদারিতে রাখতে হবে।
কাসিম জানিয়েছেন, তাঁরা যে জৈব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েছেন তাতে ডিএনএ’তে পরিবর্তন করা হয়েছে। বস্তুত সুস্থ টি-সেলে কয়েকটি ধাপে পরিবর্তন করা হয়েছে। কাজে লাগানো হয়েছে জিন প্রযুক্তি। দেখতে হয়েছে গ্রাহকের শরীর যেন বাইরে থেকে ঢোকানো কোষ বাতিল না করে। আবার সুস্থ টি-সেল একটি অপরটিকে যাতে আক্রমণ করে না বসে তাও খেয়ালে রাখতে হয়েছে। লক্ষ্য ছিল, জিন প্রযুক্তিসম্পন্ন টি-সেল বাইরে থেকে ঢুকিয়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত টি-সেল নষ্ট করে দিতে হবে। তা এই পর্বে হয়েছে।
ছটফটে অ্যালাইজাকে শুয়ে থাকতে হচ্ছিল বিছানায়। বন্ধুদের থেকে দূরে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে সে।
Comments :0