JOURNEY — AVIK CHATARJEE — AMTA AMTA KARE HAMTA — MUKTADHARA — 27 SEPTEMBER 2025, 3rd YEAR

ভ্রমণ — অভীক চ্যাটার্জী — আমতা আমতা করে হামতা... — মুক্তধারা — ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বর্ষ ৩

সাহিত্যের পাতা

JOURNEY  AVIK CHATARJEE  AMTA AMTA KARE HAMTA  MUKTADHARA  27 SEPTEMBER 2025 3rd YEAR

ভ্রমণ মুক্তধারা, বর্ষ ৩

 

আমতা আমতা করে হামতা...


অভীক চ্যাটার্জী

কথায় বলে,পথ যতই দুর্গম হয়, তাকে জয় করার আনন্দও ততই চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে ওঠে। আর সেই পথের শেষে যদি পাওয়া যায় এক অকল্পনীয় সুন্দর ক্যাম্পসাইট, তাহলে তাকে সোনায় সোহাগা ছাড়া আর হয়তো কিছুই বলা যায় না। আমাদেরও তাই হলো। আমরা যখন বালুকা ঘেরাতে পৌঁছলাম, সেই উপত্যকাকে শুধু স্বর্গের পারিজাত বনের সাথেই তুলনা করা সম্ভব! সে সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। তাকে ভাষার বাঁধনে বাঁধা বড়ই কঠিন। অন্ততঃ আমার মত মোটা দাগের লেখকের কাছে তো প্রায় অসম্ভব। শুধু বলা যায়, যে দিকেই তাকানো যায়, প্রকৃতি তার সবটুকু রস উজাড় করে ঢেলে দিয়ে তৈরি করেছে এই অদ্ভুত সুন্দর উপত্যকাকে। যে পথে এসেছি আমরা, সে পথ এখন প্রায় সাদা মেঘের গ্রাসে। সামনে দেখছি সবুজ ঘাসে মোড়া পাহাড়ের গায়ে ভেড়ার পাল নিজের মনে ঘাস খেয়ে বেড়াচ্ছে। আর এক দিকে সুউচ্চ গিরি শৃঙ্গ মাথায় বরফের টুপি পরে বুড়ো ঠাকুরদার মত বসে পান চিবুচ্ছে, তার কোনো তাড়া নেই, সে কত কাল হলো এভাবেই বসে বসে আমাদের মত অতি নগণ্য নাতিপুতিদের রঙ্গ তামাশা দেখছে, আর নিজের মনেই হাসছে। আর এক দিকে পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে এসেছে এক ঝর্না, তার নিজের আনন্দেই নাচতে নাচতে বয়ে চলেছে। তার বড় তাড়া, সে পাথরে পাথরে লাফিয়ে লাফিয়ে নিজের রাস্তা বের করে এগিয়ে চলেছে দুর্বার ছন্দে। আর আমরা, এই সবের মধ্যে বসে বসে ক্যাম্প চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে চরম আয়েশে সিঙ্গারা খাচ্ছি! হ্যাঁ, আমাদের ট্রেক অর্গানাইজার সেই ১২০০০ ফুট উপরে আমাদের সান্ধ্য আহারে সিঙ্গারা খাইয়েছিল।

অনেকটা সময় এভাবে কাটানোর পর আমরা ধীরে ধীরে ক্লান্ত শরীরে তাবুতে ফিরে আসলাম।আজ অনেকটা পথ আমরা পাড়ি জমিয়েছি। পথশ্রমে আমাদের শরীর ক্লান্ত। যদিও আমরা প্রথমে টের পাইনি, তবে একসময় শরীর জানান দিতে শুরু করলো, আমরা তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খেয়ে এসে শুয়ে পড়লাম। এরই মধ্যে আমাদের এক সহযাত্রীর শরীরের অবস্থার কিছুটা অবনতি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, আমরা যখন এক দিনে ১০০০ ফুটের বেশি উচ্চতায় উঠি, তখন আমাদের শরীর এই উচ্চতাকে মানিয়ে নিতে একটু সময় নেয়। সেই সময় কিছুটা মাথা ভারী হয়ে ওঠে, বমির উদ্রেগ আসে। এগুলো স্বাভাবিক। হাওয়ায় বসে থাকলে সেটা চলেও যায়। কিন্তু যদি না যায়, ট্রেক লিডারের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া ভালো। আমরা এই দিন প্রায় ১০০০০ ফুট থেকে উঠে এসেছি ১২০০০ ফুটে। স্বভাবতই তার শরীর কিছুটা খারাপ হয়ে উঠেছে। আমরা এবার রাতের খাবার খেয়ে ঘুমনোর ব্যবস্থা করতে লাগলাম। কাল আমাদের এই বিশাল যুদ্ধের চরম পরীক্ষার দিন। কাল আমরা পার করব আমাদের বহু প্রতীক্ষিত 

"হামতা পাস"

 

তাবুতে ঢোকার কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃষ্টি শুরু হলো ছিটে ফোঁটা করে।

Comments :0

Login to leave a comment