Md Salim

ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে নিয়ে পরাস্ত করতে হবে বিজেপি-তৃণমূলকে

রাজ্য

রাধাগোবিন্দ মান্না: কাঁথি
 

বিজেপি এবং তৃণমূল একে অপরের পরিপূরক। চোরের রাজত্বের অবসান ঘটাতে তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই শক্তিকেই হারাতে হবে। তাই বামফ্রন্ট এবং ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলিকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই হবে।
রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা এবং কাঁথিতে দুই সভায় এই আহ্বান জানিয়েছেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
দুটি সভাতে ছিলেন পার্টিকর্মীরা। মহম্মদ সেলিম ছাড়াও সভা দুটিতে পার্টিনেতা অনাদি সাহু, পার্টির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বক্তব্য রেখেছেন।  
মহম্মদ সেলিম বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলকে তাড়াতে হবে। গরিব মানুষের জন্য আমাদের লড়াই। তাঁদের পাশে থাকতে হবে। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলিকে সমবেত করতে হবে। আর তার মাধ্যমেই তৃণমূলের দুর্নীতিগ্রস্তদের পঞ্চায়েত থেকে হটাতে হবে।  
সেলিম বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব, ধর্মনিরপেক্ষতা বিপন্ন হয়েছে বিজেপি-শাসনে। দেশের সেই আদর্শ রক্ষার সংগ্রাম গড়ে তোলা দায়িত্ব কমিউনিস্টদের। তা করতে আরএসএস পরিচালিত বিজেপি-কে ঠেকাতে হবে। আরএসএস-ই মমতা ব্যানার্জিকে তৈরি করেছে। আরএসএস’র তৈরি তৃণমূল বিজেপি উভয় দলই ভয়ভীতি তৈরি করে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি ভাগাভাগি করে নিতে চায়। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত, সব কাজে কাটমানি খাওয়া, কয়লা পাচার, বালিচোর, গোরুচুরিতে যুক্ত তৃণমূলকে তাড়াতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে বিজেপি বা তৃণমূল একে অপরের পরিপূরক। গ্রামের মানুষকে নিয়ে শাসন বা পঞ্চায়েত ব্যবস্থা কায়েম করেছিল বামফ্রন্ট সরকার। তৃণমূল পঞ্চায়েতে এসে সমস্ত রকম দুর্নীতির সৃষ্টি করেছে। চোরের রাজত্বের অবসান ঘটাতে বামফ্রন্ট এবং ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।
মহম্মদ সেলিম বলেন, সিপিআই(এম)-এ তৃণমূল ও বিজেপি’র চোরদের ঠাঁই হবে না। তিনি বলেন, একসময় তৃণমূল করা শুভেন্দু অধিকারী বর্তমানে সিবিআই,ইডি’র হাত থেকে রক্ষা পেতে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। দুটো দলেরই কে কখন বিজেপি বা তৃণমূলে যাচ্ছে সেটা মানুষ বুঝে উঠতে পারছেন না। মুহূর্তে মুহূর্তে এরা দলবদল করছে। তিনি বলেন, বিজেপি সরকার দেশের জন্য ১৪ সাল থেকে কি করেছে? দেশটাকে কর্পোরেট দুনিয়া হাতে তুলে দিয়েছে। পাশাপাশি তারই সহযোগী তৃণমূল রাজ্যের পঞ্চায়েত থেকে আরম্ভ করে শিক্ষাব্যবস্থায় ঢালাও দুর্নীতির প্রবেশ ঘটিয়েছে। রাজ্যের ট্রাম, বাস বিক্রি করতে চাইছে। ফলে গোটা দেশে ও বিশ্বে দক্ষিণপন্থার বিকাশ ঘটেছে। লাল ঝান্ডা এই দক্ষিণপন্থীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তিনি বলেন, একমাত্র বামপন্থীরাই মানুষের কথা বলতে পারে। মহম্মদ সেলিম পার্টি লাইনের কথা উল্লেখ করে বলেন, বিজেপি এবং তৃণমূল বিরোধী বাইরের শক্তিকে নিয়ে লড়াই করতে হবে এবং বিরোধী ঐক্যকে জোটবদ্ধ করার জন্য সিপিআইএম নেতৃত্বদের বেশি করে অংশগ্রহণ করতে হবে। 
অনাদি সাহু বলেন, আরএসএস বিজেপি-কে পরিচালিত করে। সেই আরএসএস’র কোনও ভূমিকা ছিল না স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে। মেদিনীপুর দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল। আর দেশ, রাজ্য বিপন্ন। বিপন্ন গরিবের স্বার্থ, ধর্মনিরপেক্ষতা। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলকে হারাতে হবে। হারাতে হবে বিজেপি-কেও। জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, তৃণমূল বিজেপি-কে বাদ দিয়ে অন্যান্য সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। 
এদিন কাঁথিতে সভাপতিত্ব করেন পার্টিনেতা হিমাংশু দাস। এগরার সভায় পরিচালনা করেন পার্টিনেতা সুব্রত পন্ডা। সভাগুলিতে উপস্থিত ছিলেন ভরত মাইতি, সত্য রঞ্জন দাস, শেখ ইব্রাহিম আলি, আশিস প্রামাণিক, কালিপদ দাস মহাপাত্র, কৃষ্ণপদ মাইতি, অপর্ণা দাস প্রমুখ নেতৃত্ব।  
 

Comments :0

Login to leave a comment