প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিএ, এমএ ডিগ্রির সত্যতা নিয়ে ফের কটাক্ষ আছড়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়। মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতার নথি দেখতে চাওয়ায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে গুজরাট হাইকোর্ট ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করতেই আবার সোস্যাল মিডিয়ায় ভেসে উঠেছে মোদীর বিএ এবং এমএ ডিগ্রির সেই দুই সার্টিফিকেটের ছবি, ২০১৬ সালের ৯ মে দিল্লিতে রীতি মতো সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সাড়ম্বরে যা দেখিয়েছিলেন বিজেপি’র তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং সেই সময়ের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রী অরুণ জেটলি। সেদিনও দুই সার্টিফিকেটের মিল-অমিল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, রবিবার পুনরায় উঠল।
নেটিজেনরা অনেকেই জানিয়েছেন, মোদীর বিএ পরীক্ষার সার্টিফিকেট দিয়েছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, আর এমএ পরীক্ষার সার্টিফিকেট দিয়েছে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়। দু’টি সার্টিফিকেটেই মোদীর নাম সহ বিষয়ের নাম ও সাল-তারিখ রয়েছে হাতে লেখা। দু’টি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়, অথচ বিস্ময়করভাবে দু’টি সার্টিফিকেটেই হাতের লেখা এক! তা কীভাবে সম্ভব? প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এই সঙ্গেই তাঁরা নজর করেছেন, দু’টি সার্টিফিকেটেই ইংরেজিতে ’দামোদরদাস’-এর জায়গায় নরেন্দ্র মোদীর মধ্যনাম হিসাবে লেখা আছে ‘দামোদেরদাস’। অথচ তিনি নিজে সর্বত্র দামোদরদাস-ই লেখেন। সেই সঙ্গে ‘ইউনিভার্সিটি’ বানান হয়ে গিয়েছে ‘ইউনিবার্সিটি’। কটাক্ষ করেছেন নেটিজেনরা, ‘‘তবে কি তড়িঘড়ি সার্টিফিকেট বানাতে গিয়ে এত বানান ভুল হয়ে গিয়েছিল!’’
আগেই প্রশ্ন উঠেছিল মোদীর এমএ’র বিষয় নিয়ে। গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছিল, মোদী এমএ উত্তীর্ণ হয়েছেন ‘এন্টায়ার পলিটিক্যাল সায়েন্স’ (সমগ্র রাষ্ট্রবিজ্ঞান) নামে একটি বিষয়ে, যে বিষয়ের নাম ভূ-ভারতে কেউ কোনও দিন শোনেননি। সম্ভবত সারা বিশ্বেই কোথাও শোনা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় এই এত বছরে দ্বিতীয় কারও নাম জানাতে পারেনি, যিনি ‘এন্টায়ার পলিটিক্যাল সায়েন্স’-এ ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ সম্পূর্ণ করেছেন। এমন কেউও এই এত বছরে এগিয়ে এসে জানাননি, তিনি বিএ বা এমএ-তে মোদীর সহপাঠী ছিলেন বা মোদীর সঙ্গে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তার সঙ্গেই এবার সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে নতুন ব্যঙ্গ। কেউ লিখেছেন, এমএ’র সার্টিফিকেটে কোনও স্তাবক বোধ হয় মোদীকে খুশি করার জন্য ‘পলিটিক্যাল সায়েন্স’-এর আগে বসিয়ে দিয়েছেন ‘এন্টায়ার’ শব্দটি, তাও আবার অন্য কালির পেনে। কেউ লিখেছেন, মাইক্রোসফট যে ফন্ট (হরফ) বাজারে নিয়ে এল ১৯৯২ সালে, মোদীজীর ১৯৭৮ সালের সার্টিফিকেটেই জ্বলজ্বল করছে সেই ফন্ট! আসলে মোদীজী হলেন ভারতীয় রাজনীতির রজনীকান্ত।
বিজেপি’র নেতৃত্বের তরফে অবশ্য সারা দিনে এসবের কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। দলের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য, যিনি মোদী-বিরোধিতাকে কোনওভাবেই ছাড় দেন না, তিনিও আশ্চর্যজনকভাবে রবিবার এই সব প্রশ্নের জবাব দিতে চেম্বার খোলেননি। হয়তো রবিবার ছুটির দিন বলে।
Comments :0