POTATO BOND BLACK MARKET

২ হাজারের আলুর বন্ড
কালোবাজারে ১৫ হাজার!

রাজ্য জেলা

কোল্ড স্টোরেজে বস্তা ঢুকছে গাড়িতে। গাড়িভাড়া চড়া।

আলুর বন্ড নিয়ে চরম কালো বাজারির অভিযোগ আলু চাষীদের, জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় আলুচাষীরা বন্ড হাতে পাননি। সামান্য বন্ড আলু চাষীদের হাতে আসলেও বেশিরভাগ বন্ড ফড়েদের হাতে গিয়েছে বলে অভিযোগ আলুচাষীদের। 

তাঁরা জানাচ্ছেন, ২ হাজার টাকার বন্ড কালোবাজারে ১৪-১৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বলে জানালেন এক আলু চাষী। সারা ভারত কৃষক সভার জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক আশিস সরকার জানান, লাগাতার আন্দোলনের জেরে কালোবাজারিতে ধাক্কা দেওয়া গিয়েছে। জেলা প্রশাসন পরীক্ষামূলকভাবে নিয়ম চালু করে। যাতে বন্ড নির্দিষ্ট দিনের উল্লেখ আছে। সে দিন নির্দিষ্ট তারিখের বন্ড নিয়ে এলে কৃষককে তাঁর আলু হিমঘরে রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

আলু চাষীদের অভিযোগ শিলাবৃষ্টি নিম্নচাপের বৃষ্টিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এবছর আলু তুলতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন চাষীরা। দুদিন আগেই বন্ড দেওয়া শেষ হয়েছে। বন্ড হাতে না পাওয়া পর্যন্ত চাষিরা আলু মাঠ থেকে তুলে স্টোর করার ব্যবস্থা নিতে পারছিলেন না। আলুর বন্ড হাতে পাওয়ার পর চলছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যার জেরে বিঘ্নিত হচ্ছে আলু তোলার কাজ। স্টোরেজের মালিকদের বিরুদ্ধেও কৃষকদের ফিরিয়ে দেওয়অর অভিযোগ উঠছে।

গাড়ি ভাড়া করে স্টোরে আলু নিয়ে গিয়ে তার স্টোরে রাখতে না পেরে চরম সংকটে পড়েছেন আলু চাষিরা। 

বেলাকোপা গ্রাম পঞ্চায়েতের মোহিতনগর বানিয়াপাড়ার আলু চাষী মৃণাল রায় ৯ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন উৎপাদিত সম্পূর্ণ আলু  রাখার মতন বন্ড স্টোর থেকে সংগ্রহ করতে না পেরে ব্ল্যাকে সংগ্রহ করেছেন ২০০০ টাকার বন্ড ১৬ হাজার টাকায় কিনে। কুইন্টাল প্রতি ৬০০ টাকা দরে আলু স্টোরে ঢোকাচ্ছেন তারা বাজারেও প্রায় সমান মূল্য আলুর। ধার করে আলু চাষের খরচ জোগাড় করেছেন তারা দাম যদি না বাড়ে তাহলে তাদের চাষের খরচ উঠবে না। বউ বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে দেয়ে ঋণশোধ করতে হবে তাদের। দিনের পর দিন এভাবে চলতে থাকলে আলু চাষে উৎসাহ হারাবেন কৃষকরা। 

শহরের পার্শ্ববর্তী অন্যান্য কোল্ড স্টোরেজে আলু রাখার গাড়ির ভিড় লক্ষ্য করা না গেলেও বন্ড নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগ ওঠা বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গঙ্গা কোল্ড স্টোরেজ, যেখানে বন্ড নিয়ে অশান্তির জেরে পুলিশকে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয়েছিল। সেখানে গিয়ে দেখা যায় স্টোরের বাইরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আলু বোঝাই ছোট গাড়ি। 

স্থানীয় আলু চাষীদের অভিযোগ এই কোল্ড স্টোরেজে মোট আয়তনের মাত্র কুড়ি শতাংশ বন্ড গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের মাধ্যমে বন্টন করা হয়েছে। বাকি সবটাই কালোবাজারি হয়েছে। 

এ বছর সদর ব্লকের ৫৬৫০ সেক্টর জমিতে ও সমগ্র জলপাইগুড়ি জেলায় ৩৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে মোট উৎপাদিত আলুর কিছুটা বাজারে বিক্রি করার পর সবটাই মজুত করার মতো  ক্ষমতা রয়েছে জেলার কোল্ড স্টোরেজগুলিতে। তা সত্ত্বেও একশ্রেণির স্টোর কর্মচারী, পরিবহণ মালিক ও শাসক দলের নেতাদের মদতে স্থানীয় ফড়েরা অযথা স্টোরে আলু ঢোকাতে সমস্যার সৃষ্টি করে আলু চাষীদের।

Comments :0

Login to leave a comment