Zohran Mumdani

'একশো শতাংশ কমিউনিস্ট পাগল’, নিউ ইয়র্কের ভোটে নজরে মামদাানি

আন্তর্জাতিক

বাড়ি ভাড়ার ঊর্ধ্বসীমা থেকে শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণে পরিষেবার কথা বলছেন তিনি। সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের জোরালো সমর্থক। জোরান মামদানির প্রচার ছুঁয়েছে ডেমোক্র্যাটদের একেবারে নিচুতলাকে। রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণে প্যালেস্তাইনের জনতার মুক্তির ঘোষিত সমর্থক।
নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট পদপ্রার্থীকে ঘিরে আগ্রহ ছড়িয়েছে সব মহলেই। প্রাদেশিক আইনসভার সদস্যও জোরান মামদানি। নিউ ইয়র্কের মেয়র পদে দলের প্রার্থী কে হবে, তা নিয়েই ভোট হয়েছে ডেমোক্র্যাট পার্টিতে। ডেমোক্র্যাট পার্টির ভেতরের ভোটে তিনিই জয়ী বর্ষীয়ান অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে হারিয়ে। কুয়োমো ওজনদার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। গভর্নর পদে নির্বাচিত ডেমোক্র্যাট তিনি। কিন্তু মামদানির সমর্থনের সামনে দাঁড়াতে পারেননি।
নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে নবীন ডেমোক্র্যাট পদপ্রার্থীকে উপেক্ষা করতে পারছেন না এমনকি রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পও। দৃষ্টিভঙ্গির বিচারে তাঁর তীক্ষ্ণ বিরোধী, ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়াতেও তা ধরা পড়েছে। ট্রাম্প মামদানিকে বলেছেন, ‘একশো শতাংশ নিশ্চিত এই মামদানি কমিউনিস্ট পাগল’। 
মামদানির প্রচারের কেন্দ্রে থেকেছে আবাসনের সুবিধা। চড়া ভাড়া হাঁকার প্রবণতা বন্ধ করা তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। সেই চাইছেন নগর নিগম পরিচালিত আবাসন উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানও। যাতে দায়িত্ব নিতে পারে নির্বাচিত নগর নিগম। 
টাকা আসবে কোথা থেকে? ট্রাম্পের পক্ষে সবচেয়ে অসহ্য বিকল্পই শুনিয়েছেন মামদানি। বলেছেন, সবচেয়ে ধনীদের ওপর এবং সবচেয়ে বড় মাপের কর্পোরেট সংস্থার থেকে বাড়তি কর নেওয়ার কারণ আছে নগর নিগমের। কারণ এরাই সবচেয়ে বেশি সুবিধা আদায় করে। 
করের সংস্কারে মামদানির প্রস্তাব বছরে ১০ লক্ষ ডলার বা তার বেশি আয় করেন এমন লোকজনের ওপর নগর আয়কর বসবে ২ শতাংশ হারে।
আমেরিকায় অন্যতম আলোচ্য হচ্ছে আর্থিক বৈষম্য। হাতেগোনা কয়েকটি মাত্র ব্যবসায়িক সংস্থার বিপুল সম্পদ ক্ষোভ বাড়াচ্ছে সবচেয়ে অনিশ্চিত অংশের। যাকে ঢাকা দিতে ‘আমেরিকাকে ফের মহান’ করার উগ্র জাতীয়তাবাদী স্লোগান নিয়ে শামিল ট্রাম্প এবং তাঁর রিপাবলিকান সহযোগীরা। 
মামদানি বলছেন, সামান্য বাড়তি কর মহাধনীদের থেকে আদায় হলেও কোষাগারে আসবে ২ হাজার কোটি ডলার। প্রান্তিকতম অংশকে সামাজিক পরিষেবা দেওয়ার রাস্তা খুলবে অনেকটা। 
সামাজিক পরিষেবার মধ্যে রয়েছে বিনা বেতনে পড়াশোনা, সর্বজনীন শিশু সুরক্ষা, প্রান্তিক অংশের জন্য বিনা ভাড়ায় যাতায়াতের সুযোগ। 
আমেরিকার সবচেয়ে বড় শহর নিউ ইয়র্কের মেয়র পদে লড়তে পারেন মামদানি। ফলে ছেড়ে কথা বলবে না রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী। ভারতীয় দম্পতির এই সন্তান আফ্রিকার উগান্ডা থেকে আমেরিকায় এসেছিলেন পড়তে। ২০১৮-তে পেয়েছেন নাগরিকত্ব। অভিবাসী বিরোধী বিদ্বেষ চাগিয়ে তোলা হবে পুরোদমে, বলছেন পর্যবেক্ষকরা। 
গাজায় ইজরায়েলের আগ্রাসনকে সরাসরি গণহত্যা বলেছিলেন আমেরিকার যে কয়েকজন রাজনীতিবিদ, তার অন্যতম মামদানি। ইজরায়েলের সঙ্গে সব রকমের সহযোগিতা বাতিল করার পক্ষেও সরব হয়েছিলেন। পরে যদিও ইজরায়েল বিরোধিতার সুর খানিক নরম করতে হয়েছে। 
সংবাদমাধ্যম বিবিসি-কে ভোট বিশারদ প্র্যাঙ্ক লুনজ জানিয়েছেন তেত্রিশ বছরের মামদানিকে ঘিরে আগ্রহ প্রসঙ্গে তাঁর বিশ্লেষণ। লুন্‌জ বলছেন, নিচের স্তরে ডেমোক্র্যাট পার্টির সমর্থক এবং নেতারা চাইছেন এমন কাউকে যিনি ট্রাম্পের মতাদর্শকে চ্যালেঞ্জ জানানতে পারেন। কড়া প্রশ্ন তুলতে পারেন তাঁর রাজনীতিতে। হাজির করতে পারেন ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কাজের নতুন ভাবনা। মামদানির মধ্যে সেই প্রতিশ্রুতি দেখতে পাচ্ছেন ডেমোক্র্যাটদের বড় অংশ।

Comments :0

Login to leave a comment