প্রসঙ্গত,আবাস যোজনার দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে এবং নিজেদের প্রাপ্য বুঝে নিতে ৩০ ডিসেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার ব্লকের বিডিও অফিসে মিছিল করে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীদের। অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীননাথ দাস এবং ব্লকের বিডিও শানু বক্সির যোগসাজোশে তাঁদের উপর পুলিশি নির্যাতন চালানো হয়। ইটভাঁটার শ্রমিক পরিবারের গৃহবধূ আরজুনা বিবিকে বিবস্ত্র করে বিডিও অফিসের সামনেই চুলের মুঠি ধরে মারধর করেন পুরুষ পুলিশ কর্মীরা। আরজুনা বিবির স্বামী শেখ সোনুর অভিযোগ, পুলিশ লকআপে সারারাত ধরেও আরজুনা বিবির উপর পাশবিক অত্যাচার চালানো হয়। স্থানীয় সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, পার্টি অফিসে ঢুকে পার্টির জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহিকে ধারধাক্কা দিয়ে গ্রেপ্তার করে নন্দকুমার থানার পুলিশ। নন্দকুমার থানার ওসি মনোজ ঝাঁ’র নেতৃত্বে পার্টি অফিসেও যথেচ্ছ ভাঙচুর করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি চালিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিগুলি। বাদ যায়নি নন্দকুমার ব্লকও। তারই প্রতিবাদে এবং নিজেদের ন্যায্য পাওনার দাবিতে ৩০ ডিসেম্বর নন্দকুমার ব্লকের বিডিও’র কাছে ডেপুটেশন দিতে যান সিপিআই(এম) নেতাকর্মীরা। অভিযোগ, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করার প্রয়োজন বোধ করেননি নন্দকুমার ব্লকের বিডিও শানু বক্সি। ডেপুটেশন দেওয়ার দাবিতে অনড় ছিলেন বঞ্চিত গ্রামবাসীরা। তখন তাঁদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বিশাল পুলিশবাহিনী।
বিডিও অফিসের সামনে থেকে গ্রেপ্তার হওয়া আরজুনা বিবি, শেখ আখতার আলি, রফিকুল ইসলাম, নিতাই জানা, গোপাল সামন্ত, কৃষ্ণেন্দু বর্মণ, সেখ সাহাজাহান আলি, জন্মেজয় রাণা, সেখ সাত্তার, আশীষ গুছাইত সহ ১০ সিপিআই(এম) কর্মী সমর্থকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ৩০৭, ৩৩৩ সহ একাধিক গুরুতর ধারায় মামলা সাজানো হয়। ধৃত বাম কর্মীদের ৩১ ডিসেম্বর তমলুক জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক ৩ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন। সেই মোতাবেক মঙ্গলবার ফের তাঁদের আদালতে হাজির করানো হলে প্রত্যেকেই জামিন পেয়েছেন।
এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার নন্দকুমারে বিক্ষোভসভা এবং মহামিছিলের ডাক দেয় সিপিআই(এম)। নন্দকুমার পার্টি অফিস থেকে শুরু হয়ে, বিডিও অফিস ঘুরে মিছিল পৌঁছয় নন্দকুমার থানার সামনে। এদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সুজন চক্রবর্তী, অনাদি সাহু, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, নিরঞ্জন সিহি, সেখ ইব্রাহিম আলি, পরিতোষ পট্টনায়েক প্রমুখ।
Comments :0