বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি মন্ত্রকের উপদেষ্টা হাসান আরিফ প্রয়াত। স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা তিনটে নাদাগ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। জানা গেছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩।
গত ৫ আগস্ট টানা রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের জেরে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা করেন। এরপরই সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। তাঁর সঙ্গে বোন শেখ রেহানাও দেশ চেড়ে চলে যান।
পরের দিন হিংসায় জ্বলতে থাকে বাংলাদেশ। রক্তস্রোত থামে না। হাসিনা দেশ ছাড়লেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই ছিল না। পুরোপুরি নৈরাজ্যের কবলে চলে যায় গোটা দেশ। ওই দিন সকালেই জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি। এরপরই রাষ্ট্রপতির নির্দেশে মুক্তি পান বিএনপি নেত্রী এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিএনপি, জামাত-ই-ইসলামের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ছাত্র সহ ২ হাজার ২০০ জনকে জামিনে মুক্তি দিয়েছি ঢাকার আদালত। ওইদিন কোট সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া সমস্ত ছাত্র এবং অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মীদের মুক্তির নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপতি। এরপরই তাঁদের মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই পরিস্থিতির মধ্যেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মহম্মদ ইউনুসকে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন। ৮ আগস্ট দেশজুড়ে চূড়ান্ত আরাজকতার মধ্যে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা পদে শপথ নেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মহম্মদ ইউনুস। গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে প্রথমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রক এবং ভূমি মন্ত্রকের উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছিলেন হাসান আরিফ। পরে তাঁকে ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিন হাসান আরিফের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তাঁর সহকারী সচিব মো. আবেদ চৌধুরী।
১৯৭০ সাল থেকে আইন পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন হাসান আরিফ। ছিলেন বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীও। ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ।
তাঁর কর্মজীবন শুরু ১৯৬৭ সালে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে। ১৯৭০ সালে ঢাকায় চলে যান। সেখানে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
AF Hassan Ariff
প্রয়াত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফ
×
Comments :0