কিছুদিন কোন তৎপরতা দেখা যায়নি সিবিআই আধিকারিকদের মধ্যে। হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার সকালে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে তৎপর সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার সকালে একযোগে শহরের চার জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। কালীঘাটের কাকু অর্থাৎ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বেহালার ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থ সরকার, বেহালার ব্যবসায়ী সন্তু গঙ্গোপাধ্যায় এবং পার্থ চ্যাটার্জির প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক সুকান্ত আচার্যের বাড়িতে চলছে সিবিআই তল্লাশি।
গোপাল দলপতির মুখে প্রথম শোনা গিয়েছিল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নাম। পরে তাঁকে তলব করা হয়েছিল গত ১৫ মার্চ। নিজাম প্যালেসে সিবিআই জেরার মুখে পড়েন অভিষেক ব্যানার্জির ঘনিষ্ঠ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে যিনি ইতিমধ্যে ‘কালীঘাটের কাকু’ হিসাবে পরিচিত। সেদিন মাত্র ঘণ্টা তিনেক জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল সুজয় ভদ্রকে। যদিও সেদিন সব অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
নিয়োগ দুর্নীতি কাকে কালীঘাটের কাকুর প্রসঙ্গ সামনে আনেন ধৃত শিক্ষা ব্যবসায়ী তাপস মণ্ডলই। সাংবাদিকদের সামনেই নিয়োগকাণ্ডে ধৃত তাপস মণ্ডল জানিয়েছিলেন, কুন্তল ঘোষই বারেবারে কালীঘাটের কাকুর কথা বলতো।
নিয়োগ দুর্নীতির মামলার তদন্তে এবার ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বাড়িতে পৌঁছে গেল সিবিআই। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দিয়ে বাড়ি ঘিরে তল্লাশি অভিযানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বেহালার পর্ণশ্রীর বাড়িতে অভিযানে সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষ ‘কালীঘাটের কাকু’-র নাম প্রকাশ্যে এনেছিলেন প্রথম। দুর্নীতির মামলায় ধৃত তাপস মণ্ডলের মুখেও সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নাম শোনা গিয়েছিল। তাঁর নাম শোন গিয়েছিল গোপাল দলপতির মুখেও। নিয়োগ দুর্নীতির টাকা অভিযুক্ত তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তলের কাছ থেকে টাকা পৌঁছে যেত সুজয়কৃষ্ণ ওরফে কালিঘাটের কাকুর কাছে।
নিজেকে ‘সামান্য’ ব্যক্তি বলে দাবি করা সুজয় ভদ্র অভিষেক ব্যানার্জির পারিবারিক সংস্থা ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’র ডিরেক্টর বনে গিয়েছিলেন। দুবছরের বেশি সময় ধরে ডিরেক্টর ছিলেন।
অভিষেক ব্যানার্জিকে ছোঁয়ায় ক্ষমতা পৃথিবীর কারো নেই। রীতিমতো বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের সামনে বসেই সম্প্রতি জানিয়ে ছিলেন কালীঘাটের ‘কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। অভিষেক ব্যানার্জি তাঁর ‘সাহেব’ তাও জানালেন তিনি।
উল্লেখ্য নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এই নিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাসি চালিয়েছে সিবিআই। উদ্ধার হয়েছে টাকা, ওএমআর শিট সহ একাধিক নথি। গ্রেপ্তার হয়েছে তৃণমূলের বহু নেতা কর্মী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দোষীদের কোন শাস্তি তারা দিতে পারেনি। উল্টে তদন্ত শ্লথ গতিতে চলার জন্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে সিবিআইকে। আর প্রতিবার যখন এই নতুন নতুন নাম উঠে আসে দুর্নীতিতে তখন ৭০০ দিনের বেশি সময় ধরে রাস্তায় বসে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া চাকরি প্রার্থীদের মুখে একটাই প্রশ্ন শোনা যায়, ‘আমাদের চাকরি কবে হবে? তা কি আদৌ হবে?’
Comments :0