গত ২৮শে মার্চ সিঙ্গুর থেকে পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্পের শুভ সূচনা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।আর সেখানেই হুগলি জেলায় সরকারি কি কি কাজ করেছেন তার খতিয়ান তুলে ধরেন তিনি।সেখানেই বিভিন্ন ক্লাসটারের মধ্যে হুগলি জেলার শ্রীরামপুরে সিল্ক হাব তৈরী করা হয়েছে বলে জানান।এই সিল্ক হাবের কথা প্রথম ঘোষনা করেছিলেন ২০১৭ সালে।তারকেশ্বরের একটি প্রশাসনিক সভা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম ঘোষণা করেন শ্রীরামপুরে সিল্ক হাব তৈরী করা হবে।এর মধ্যে কেটে গেছে প্রায় ছ'টা বছর।কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে তার ঘোষিত সিল্ক হাব বাস্তবায়িত হয়নি।
সিল্ক হাবের জন্য শ্রীরামপুর পুরসভার প্রভাসনগরে জমি নেওয়া হয়।বাস্তবে দেখা যাচ্ছে প্রস্তাবিত সিল্ক হাবের জায়গায় জলা জমি ও জঙ্গল হয়ে পরে রয়েছে।সিল্ক হাবের জন্য একটা ইট গাঁথা হয়নি এই ছয় বছরে।একটা সময় এই জমি তে চাষ হতো।সেই জমি চাষিদের থেকে নেওয়া হয়েছে।সকল চাষিই স্বইচ্ছায় সিল্ক হাবের জন্য জমি দিয়েছেন।তবে তাদের দাবি তাদের প্রাপ্য মত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি।
ইচ্ছুক চাষি নরেশচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘সিল্ক হাব হয়নি।চাষিদের কিছু সমস্যা আছে।জমির ঝামেলা মেটেনি। আমরা চাই সিল্ক হাব হোক,তবে চাষিদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে হোক।আজ অবধি কোন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি।আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন এখানে কিছু হয়নি।আমরা চাই সিল্ক হাব হোক,আরো অন্য শিল্প হোক।শিল্প হলে উন্নয়ন হবে এলাকার।’’ আরো এক ইচ্ছুক চাষি রঞ্জন দত্ত বলেন, ‘‘অনেক আন্দোলন করেছিলাম,শেষে আমাদের পুরপ্রতিনিধি যিনি আছেন তার কথা উপর ভরসা করে আমরা রাজি হয়েছিলাম এই জমি তে সিল্ক হাব হোক। সিল্ক হাব হোক চাই,তবে আমাদের চাষ করতেও দেওয়া হচ্ছেনা,সিল্ক হাবও হচ্ছেনা।আমরা সবসময় চাইছি সেটা হোক।তবে আমাদের প্রাপ্য মিটিয়ে হোক।’’
স্থানীয় বাসিন্দা রামেশ্বর গিরি কথায়, ‘‘জানি মুখ্যমন্ত্রী ঘোষনা করেছিলেন সিল্ক হাব হবে।তবে কোথায় হয়েছে। শুধু গল্প হয়েছে। শুধু জলা জমি আর জঙ্গল হয়ে পড়ে আছে। হলে এলাকার উন্নতি হবে।’’
গোপাল সানা নামে আরো এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘‘কোথাকার কি,কোন কিছুই হয়নি।ফাঁকা মাঠ হয়ে পড়ে আছে।কারখানা হলে তো ভালো হত।স্থানীয় মানুষ কাজ পাবে।আশেপাশে দোকান হবে,তাতেও কিছু জীবিকা হবে,খালি আশ্বাস দিয়েছেন।’’
সিআইটিইউ হুগলি জেলা সম্পাদক তীর্থঙ্কর রায়ের কথায়, ‘‘২০১৭ সালে আমরা শুনেছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তারকেশ্বরে বলেছিলেন শ্রীরামপুরে একটা সিল্ক হাব তৈরি করবেন।আর ২০২৩ সালে সিঙ্গুরের সভা থেকে ঘোষনা করে দিলেন শ্রীরামপুরে নাকি সিল্ক হাব হয়ে গেছে।২০১৭ থেকে ২০২৩ এখানে ঘন জঙ্গল ছাড়া কিছু নেই।এখানে কোন রকম হাব তৈরি হয়নি,প্রস্তাবিত শিল্যানাস করা জায়গা ঘন জঙ্গলে ভর্তি।শ্রীরামপুরের সব মানুষ এটা জানেন,হয়তো সম্ভবত আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এটা জানেন না।’’
যদিও শ্রীরামপুর পুরসভার পুরপ্রধান গিরিধারি সাহা বলেন, ‘‘মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা স্বপ্ন এটা এখানে একটা সিল্ক হাব হবে। তবে ওই জায়গা ঘেরা বা কোন জায়গা রয়েছে সেটা প্রশাসন বলতে পারবেন।পূর্ত দপ্তর সীমানা প্রাচীরের জন্য টেন্ডার করেছে।পুরসভা সাহায্য করবে।দিদিমণি কি বলে গেছেন জানিনা।আমরা শুধু বলতে পারি জমি ডিমার্কেশন হয়েছে,টেন্ডার হয়েছে,বাকি প্রশাসন বলতে পারবে।’’
Comments :0