‘‘২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের মতো ভোট লুঠ করবে বলে যদি তৃণমূল এবং বিজেপি মনে করে থাকে। তবে তারা ভুল ভাবছে। মানুষ এবার ভোট লুঠ করতে দেবে না। গ্রামের মানুষ নিজেদের মধ্য ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করেছেন।’’ সোমবার মালদহে সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন মহম্মদ সেলিম। এদিন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক বলেন, সাগরদিঘি প্রমান করে দিয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি উভয়কে হারানো সম্ভব।
সাগরদিঘি বিধানসভা উপ-নির্বাচনে ২৫ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের জোট প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস। ২০২১ সালে ৫০ হাজার ভোটে ওই আসনে জয়ী হয় তৃণমূল। দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিজেপি। ২ মার্চ পূর্বের সব অঙ্ক বদলে জয়ী হন বামফ্রন্ট সমর্থীত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস। এদিন সলিম বলেন, ‘‘তৃণমূল বিজেপি সব রাজনৈতিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হলে মানুষ যে তাদের সমর্থন করবেন তার প্রমান সাগরদিঘি।’’
বায়রন বিশ্বাসকে এখনও পর্যন্ত বিধানসভার পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে শপথ বাক্য কেন পাঠ করানো হলো না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘‘বিধানসভার অধ্যক্ষ দলীয় বিধায়কের মতো আচরন করছেন। আইন মেনে কেন এখনও পর্যন্ত বায়রন বিশ্বাসকে কোন চিঠি পাঠানো হলো না? কেন দলত্যাগ বিরোধী আইনের ভিত্তিতে দল বদল করা বিধায়কদের বিধাবক পদ খারিজ করা হলো না?’’
পঞ্চায়ের নির্বাচনে জোট হবে কি না সেই বিষয় সেলিমকে প্রশ্ন করা হলে সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘জেলা অনুযায়ী বল্ক অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কোথায় কোন শক্তিকে সমর্থন করা হবে।’’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘আমাদের রাজ্য সম্মেলন থেকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে তৃণমূল বিজেপি বিরোধী সমস্ত শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও আমরা সেই আহ্বান জানাবো।’’
সেলিম বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে নবান্ন পর্যন্ত দুর্নীতি তন্ত্র চলছে। যেই শুভেন্দু তৃণমূলের হয়ে গত পঞ্চায়েতে মালদহে ভোট লুঠ করেছিল সে আজ বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। এই দুর্নীতি এবং দুস্কৃতি তন্ত্রে বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই।’’ রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণের পাশাপাশি লোকপাল এবং লোকায়ুক্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। তিনি বলেন, ‘‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে লোকপাল এবং লোকায়ুক্ত আইন তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্নীতি বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য লোকপাল এবং আমাদের রাজ্যে লোকায়ুক্ত প্রয়োগ করা হচ্ছে না।’’
সেলিমের কথায়, কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই সরকার সাংবিধানক পদ গুলির মাথায় নিজেদের পছন্দের লোক বসিয়ে ক্ষমতা কেন্দ্রিভূত করতে চাইছে। এই বিষয় মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি নিশানা করেন সেলিম।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা বিজেপি ঘনিষ্ট অনুপম খেরের। সেই বিষয় প্রশ্ন করা হলে সেলিম বলেন, ‘‘আরএসএস তাদের ঘনিষ্টদের দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়াচ্ছে। কয়েকদিন আগে দ্যা কাশ্মীর ফাইলসের পরিচালক ভারতীয় জাদুঘরে দাঁড়িয়ে বলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে তিনশো কাশ্মীর রয়েছে। তৃণমূল চুপ করে রয়েছে কোন প্রতিবাদ করেনি এর। সংস্কৃতি দপ্তরের টাকায় কলকাতায় দাঁড়িয়ে এই সব বলে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে।’’
Comments :0