সিরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম সিরিয়ান আরব নিউজ এজেন্সি বা সানার প্রতিবেদন অনুযায়ী গোলান পর্বতমালা থেকে ক্ষেপনাস্ত্র হানা চালিয়েছে ইজরায়েল। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ ক্ষেপনাস্ত্রগুলি আছড়ে পড়ে সিরিয়ার মাটিতে। এই হামলার ফলে সিরিয়ার ২ সেনা জওয়ান জখম হয়েছেন বলেও সানা’র প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
সিরিয়ার সেনাবাহিনীর একটি সূত্রের দাবি, সিরিয়ার দক্ষিণে গোলান পর্বতমালা দখল করে রেখেছে ইজরায়েল। মঙ্গলবার রাতে সেখান থেকেই একাধিক ক্ষেপনাস্ত্র উড়ে এসেছে দামাস্কাসের দিকে। ক্ষেপনাস্ত্র হানার ফলে দামাস্কাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সাঈদা জায়নাব শহরতলীতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যদিও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চরিত্র বা পরিমাণ জানানো হয়নি সিরিয়ার সেনাবাহিনীর তরফে।
ইজরায়েল ঐতিহাসিক ভাবে নিজেদের ভূখন্ডের বাইরে হামলা চালানোর বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটে থাকে। সেদেশের সরকারের তরফে এই জাতীয় অভিযোগ স্বীকার কিংবা অস্বীকার কোনওটাই করা হয়না। মঙ্গলবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। যদিও উত্তর ইজরায়েলের গ্যালিলি অঞ্চলের রাতের আকাশে ক্ষেপনাস্ত্রের মতো দেখতে একাধিক বস্তুকে উড়ে যেতে দেখা গিয়েছে। সেই দৃশ্য ক্যামেরা বন্দী হয়ে ইতিমধ্যে ভাইরাল। দামাস্কাসে হামলা এবং উড়ন্ত বস্তু দেখতে পাওয়ার সময় কাছাকাছি হওয়ায় সিরিয়ার করা অভিযোগ গতি পেয়েছে। একইসঙ্গে গ্যালিলিতে যুদ্ধবিমান ওড়ারও শব্দ শোনা গিয়েছে বলে টুইটারের দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
চলতি বছরের নভেম্বর মাসেও সিরিয়ার হোমস শহরের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল ইজরায়েলের বিরুদ্ধে। সেই হামলায় ২ সিরিয়ান সেনা জওয়ান প্রাণ হারান বলে দাবি করা হয়।
অসমর্থিত সূত্রে ইজরায়েলের দাবি, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে সেদেশের রাষ্ট্রপতি বাসার আল আসাদকে সমর্থন করছে ইরান। হোমস, দামাস্কাসের মতো বিমানঘাঁটিগুলিকে ব্যবহার করে সিরিয়ায় ঢালাও অস্ত্র পাঠায় ইরান। সেই হাতিয়ার এবং রাশিয়ার সাহায্যে বিদ্রোহীদের হারাতে পেরেছেন বাসার আল আসাদ। কিন্তু তার পরিবর্তে এই বিমানঘাঁটিগুলির রাশ চলে গিয়েছে ইরানের হাতে। বর্তমানে এই বিমানঘাঁটিগুলি ব্যবহার করে লেবাননের হিজবুল্লা এবং ইজরায়েল অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে হামাস গোষ্ঠীকে অস্ত্র সরবরাহ করছে ইরান। তারফলে ইজরায়েলে মুহূর্মুহ রকেট হামলা চালাচ্ছে হামাস। হামাসের অস্ত্রভান্ডার ধ্বংস করতেই সিরিয়ার এই বিমান ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে।
সিরিয়ার দাবি, ২০১১ সাল থেকে শতাধিক বিমান এবং ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। অভিযোগ উঠলেও প্রতিক্ষেত্রে নিরব থেকেছে ইজরায়েল।
Comments :0