Amit Saha

জাত ভিত্তিক সমীক্ষার কাজে নাকি বিজেপি বিরোধিতা করেনি দাবি শাহের

জাতীয়

ভোট পেতে জাতভিত্তিক সমীক্ষার পক্ষে সাফাই গাইলেন স্বারষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। শুক্রবার ছত্তিশগড়ে এসে তিনি দাবি করেন, জাতভিত্তিক সমীক্ষার কাজে বিজেপি কখনও বিরোধিতা করেনি। জাতিভিত্তিক সমীক্ষা সহ ১৭টি জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের বিষয়ে কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে সাংবাদিকরা অমিত শাহের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তখন তিনি এই দাবি করেন। এই বিষয়ে তিনি দাবি করেন বিজেপি কখনই জাতভিত্তিক সমীক্ষার বিষয়ে আপত্তি জানায়নি। তবে, খুব চিন্তাভাবনা করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই বিষয়ে যা কথা রয়েছে তা সঠিক সময়ে বলা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন অমিত শাহ।
এদিন ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুরে এই দাবি করছেন অমতি শাহ। অথচ দেশের বিরোধী দলগুলি একযোগে গোটা দেশে জাতভিত্তিক সমীক্ষা করার দাবি জানিয়ে আসছে সংসদের ভিতরে এবং বাইরে। বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত ‘ইন্ডিয়া’ ভুক্ত দলগুলির বৈঠক থেকে জাতভিত্তিক জনগণনার দাবি একযোগে জানিয়েছে ২৬টি বিরোধী রাজনৈতিক দল। তারা এই বিষয়ে সর্বসম্ম‍‌তিতে প্রস্তাবে গ্রহণ করে। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিরোধীদের এই দাবি কোনও পাত্তাই দেয়নি মোদী সরকার। এমনকি বিহারের বিজেপি’র সঙ্গে জোট সরকার থাকাকালীন নীতীশ কুমার এই সমীক্ষার কাজ চালানোর বিষয়ে উদ্যোগ নিলেও তারা বাধা দিয়েছে। এই কাজের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বিজেপি অনুগত আইনজীবীরা। এমনকি এই কাজকে ভেস্তে দিতে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত তাঁরা দৌড়িয়েছেন। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশেই  ইতিমধ্যে বিহার জাতভিত্তিক সমীক্ষার কাজ শেষ করেছে নীতীশ কুমারের সরকার। কর্ণাটক সহ অন্যান্য বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিতেও এই কাজ খুব দ্রুত বাস্তবায়িত কারর উদ্যোগ নিয়েছে। 
সমাজের অনগ্রসর শ্রেণীর সংরক্ষণের প্রশ্নে এই সমীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও এর বিরুদ্ধে বারবার তোপ দেগেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদী। বিরোধীদের এই দাবির সমালোচান করে মোদী প্রকাশ্য জনসভায় দাঁড়িয়ে একাধিকবার বলেছেন, বিরোধীরা এই সমীক্ষার নামে সমাজে ভাগ করতে চাইছে। তারা ফের দেশকে টুকরো টুকরো করার মত পাপ কাজে নেমেছে। 
মোদী যখন এই সমীক্ষার বিষয়ে তীব্র বিরোধিতা করেছে এমনকি বিজেপি’র কোনও নেতা এবিষয়ে যখন কোনও টু শব্দটি করেননি, সেই সময় আচমকা অমিত শাহ’র এই দাবিকে ঘিরে কৌতূহল তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। ছত্তিশগড় সহ পাঁচ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস সহ বিরোধীরা জাত ভিত্তিক সমীক্ষা’র বিষয়টি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু করায় সমাজে তফসিলি, আদিবাসী সহ সমাজের অন্যান্য পিছিয়ে থাকা অংশের মানুষের কাছে  তারা যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছে বলে মনে করেছেন তারা। একই সঙ্গে জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিও ভোটারদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। তাদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধু ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষ ছাড়ানোর বিজেপি’র চিরাচরিত রাজনৈতিক কৌশল সেভাবে দাগ কাটতে পারছে না। এখন বিপাকে পরে অমিত শাহ বাধ্য হয়ে জাতভিত্তিক সমীক্ষার পক্ষে কথা বলতে বাধ্য হয়েছেন। সমাজের এই অংশের ভোট পেতে এখন তিনি উলটো কথা বললেও উচ্চবর্ণের স্বার্থে রাজনীতি করা বিজেপি কখনই এই সমীক্ষার পক্ষে দাঁড়াবে না তা মোদীর আক্রমণাত্মক কথাতেই তা স্পষ্ট। কারণ মোদী টানা ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও এই বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেয়নি মোদী সরকার। এমনকি অধিকাংশ রাজ্যগুলিতে সরকার পরিচালনা করলেও সেখানেও এই কাজ করেনি।         
 

Comments :0

Login to leave a comment