‘সিনওয়ার-হত্যার বদলা’ নিতে শনিবার হেজবোল্লার পাল্টা ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতাইয়াহুর বাড়ি। শনিবার সকাল থেকেই সিজারিয়ায় নেতানইয়াহুর বাড়ি সহ উত্তর ইজরায়েলের একাধিক শহর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় হেজবোল্লা। শনিবারের হামলার সময়, সস্ত্রীক নেতাইয়াহু বাড়িতে অনুপস্থিত থাকায় কেউ হতাহত হননি। অন্যদিকে এদিনই উত্তর গাজার জাবালিয়া উদ্বাস্তু শিবির সংলগ্ন এলাকায় একাধিক হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলী সেনা। গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই এলাকায় একতরফা আক্রমণে বেশ কয়েকজন শিশু অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন।
গাজার বেত লাহিয়ায় শনিবার ইন্দোনেশিয়ার সরকারের তৈরি এক হাসপাতালেও হামলা চালায় ইজরায়েলী সেনা। ক্ষেপণাস্ত্র হানা সহ হাসপাতাল চত্বরে বেপরোয়া গুলি বর্ষণে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গাজার ‘আল আওদা’ হাসপাতালে রাতভর বিমান হানায় শনিবার পর্যন্ত অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক শিশু ও মহিলা। আহত হয়েছেন প্রায় ৮০ জন। মধ্য গাজার জাওয়েদা এলাকায় ইজরায়েলের এক বিমান হানায় দু’জন শিশু সহ অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। মাঘাজি উদ্বাস্তু শিবিরে আরেকটি হামলায় একই পরিবারের ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। লাগাতার বিমান হানায় উত্তর ও মধ্য গাজার ইন্টারনেট ও যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হওয়ায় বন্ধ করতে হয়েছে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার কার্যকলাপ।
পাশাপাশি লেবাননের রাজধানী বেইরুটের এক প্রধান সড়কে ইজরায়েলের বিমান হানায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। শহরের জনবহুল দাহিয়ে এলাকায় হেজবোল্লার সদর দপ্তর লক্ষ্য করেও অন্তত তিনটি বিমান হানা চালায় ইজরায়েল। ইজরায়েলী হামলায় এদিনই পূর্ব লেবাননের বালুল গ্রামে এক গ্রাম প্রধান সহ মোট পাঁচ জন নিহত হন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ব্যাপী এই সংঘর্ষে লেবাননের প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত ৪ লক্ষ শিশু।
এদিনই ইজরায়েলের উপর হেজবোল্লার সমস্ত আক্রমণের মূল পরিকল্পনাকারী নাসের রশিদ নিহত হয়েছেন। এদিকে সিনওয়ারের মৃত্যুর পর ইজরায়েলী পণবন্দিদের হামাসের মুক্ত করার সম্ভাবনা আরও ফিঁকে হয়ে আসছে বলেই মনে করছেন কূটনীতিকদের বড় অংশ। সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি সহ গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কোন পণবন্দীকে ছাড়া হবে না বলে আগেই জানায় হামাস। শুক্রবারেই নেতানইয়াহু স্পষ্টভাবেই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেন। এরই মধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়োতোল্লা আলি খামেনেই সিনওয়ারের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে জানান, কোন পরিস্থিতিতেই হামাস যুদ্ধ বন্ধ করবে না।
Netyaniyahu Hezbollah
হেজবোল্লার নিশানায় নেতানইয়াহুর বাড়ি
×
Comments :0