পরিযায়ী শ্রমিকদের হুমকির ভিডিও ভুয়ো। এই ভিডিও ছড়িয়েই আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে তামিলনাডুতে। তথ্য অনুসন্ধানী অন্যদের সঙ্ঘে ভুয়ো ভিডিও’র কারবার ফাঁস করেছিলেন মহম্মদ জুবেইর। এবার তাঁকে খতম করার হুমকি দেওয়া শুরু হলো।
যে যে টুইটার হ্যান্ডেল থেকে এমন নাশকতার হুমকি, সেগুলি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িকদের বলেই পরিচিত নেট মহলে।
তামিলনাডুতে পরিযায়ী শ্রমিকদের হুমকি ঘিরে খবরের জেরে বিবৃতি জারি করে সুরক্ষার আশ্বাস দিতে হয় মুখ্যমন্ত্রী এবং ডিএমকে নেতা এমকে স্ট্যালিনকে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। কারণ বিহারে বিজেপি বিষয়টিকে রাজনৈতিক আক্রমণের উপাদানও বানিয়েছে।
তথ্য অনুসন্ধানী, পরিভাষায় ‘ফ্যাক্ট চেকার’, তাঁদের অনেকেই দেখিয়ে দেন এমন ভিডিও এই সময়ে তামিলনাডুর নয়। তার মধ্যে রয়েছেন ‘অলট নিউজ’-র সহ প্রতিষ্ঠাতা জুবেইরও। তামিলনাডু পুলিশও জানায় ভিডিও ভুয়ো। জুবেইরদের তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয় তামিলনাডুর রাজ্যস্তরের একাধিক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে।
জুবেইরও পেতে শুরু করেন হুমকি। উগ্র দক্ষিণপন্থী স্তম্ভলেখক হর্ষিল মেহতা থেকে ওপিইন্ডিয়ার প্রাক্তন সম্পাদক অজিত ভারতীরা জঘন্য ভাষায় দিচ্ছেন হুমকি। বেঙ্গালুরুর পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। একটি টুইটে ইসলামিক একটি রীতির উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘এবার এমনভাবে সেটি হবে যে মূত্রত্যাগ করতে নল লাগবে।’ আরেকটিতে বলা হয়েছে, ‘সময় এসেছে। এবার জুবেইরকে আখলাকের পরিণতির দিকে পাঠাতে হবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৫’তে উত্তর প্রদেশের দাদরিতে গোমাংস রাখার গুজব ছড়িয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল আখলাককে।
জুবেইর বলেছেন, ‘‘হুমকি নিয়মিত পাই, উপেক্ষাই করি। তবে এবার সরাসরি খতমের কথা বলা হয়েছে।’’ ‘অল্ট নিউজ’-এর অপর প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিন্হা সংবাদ প্রতিষ্ঠান ‘দ্যা ওয়্যার’-কে জানিয়েছেন যে আইনজীবীদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।
জুবেইর হিন্দুত্ববাদীদের নিয়মিত আক্রমণের মুখে পড়েছেন। এর আগে ২০২২’র জুনে তাঁকে গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নিয়ন্ত্রিত দিল্লি পুলিশ। তখন অন্য একজনের টুইটকে আশ্রয় করে জুবেইরের বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ অভিযোগ দায়ের করা হয়।
সেই অভিযোগের ভিত্তি পায়নি সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতে তাঁর টুইট বন্ধ করার জন্য নির্দেশের আবেদনও জানায় পুলিশ। আদালত বলেছিল, একজন সাংবাদিককে টুইট বন্ধ রাখতে বা লেখা বন্ধ করতে বলা যায় না।
Comments :0