গ্রীষ্মকাল ফলের ঋতু। এ সময়ে বিভিন্ন ধরনের ফল পাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে কাঁচা তালের শাঁস অন্যতম, যা বছরের অল্প সময় পাওয়া যায়। তারমধ্যে থাকা সুস্বাদু নরম জলীয় অংশ তালশাঁস নামে পরিচিত। প্রায় ৮০ শতাংশ জল থাকে তালের শাঁসে। রয়েছে কার্বহাইড্রেট, অল্প প্রোটিন ও ফ্যাট। রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি এবং প্রয়োজনীয় বিভিন্ন খনিজ উপাদান যেমন পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, জিঙ্ক ইত্যাদি। আরও রয়েছে ফাইবার এবং প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। নরম, হালকা নরম বা একটু শক্ত প্রকৃতির হয়ে থাকে। এই তালশাঁস খেতেও যেমন সুস্বাদু তেমনি রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। মৌসুমি এই ফলে রয়েছে বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা।
বাঁকুড়ায় গরম চলছে, আবার মাঝে মধ্যে বৃষ্টিও হচ্ছে। এই আবহাওয়ার মধ্যে তালশাঁস কিন্তু চলে এসেছে। গ্রাম এলাকার গরীব যুবকরাই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। ভোরে গাছে উঠে কাঁচা তালের কান্দি পেড়ে এনে নানা জায়গায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করছেন। বুধবার বাঁকুড়া ফায়ারব্রিগেড বাজারে এসেছিল ছাতনার জামতোড়া গ্রাম থেকে সঞ্জয় মান্ডি। জানায় গ্রামে কাজ তো নেই’ই। বাইরেও কাজ কোথাও। তাই কয়েকটা দিন তালশাঁস বিক্রি করবে। সারাদিনে ৫০০ টাকা বিক্রি হয়। গাছের মালিকদের ২০০ টাকা দিতে হয়। ১০টাকায় দুটি তালশাঁস বিক্রি করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন,বহুগুন রয়েছে তালশাঁসে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। শরীরের ক্লান্তি দূর করে। অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। জলশূন্যতা রোধ করে। আয়রনের ঘাটতি মেটাতেও সহায়ক। সেই সঙ্গে লিভার থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেয়। এক সময়ের গ্রীষ্মকালীন তৃষ্ণা মেটানোর অন্যতম উপকরণ ছিল তালের শাঁস। খেয়েই জুড়িয়ে যেত শরীর, তৃপ্তি পেত মন। এখন সেই তালশাঁস পৌঁছে গেছে শহরের অলিতে-গলিতে, তবে আগের মতো কদর আর নেই বললেই চলে। করণ এক সময় গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই দেখা যেতো তালগাছ। এখন তা দেখা যায় না বললেই চলে। তালগাছ কমে যাওয়ায় শাঁসের উৎপাদনও কমেছে। তবে যেটুকু মিলছে, তা শহরের বাজারে পৌঁছাচ্ছে দ্রুত দাম বেশি হওয়ায় তা জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তালের শাঁসে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা, জল ও খনিজ পদার্থ, যা গ্রীষ্মে শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়ক। তবু এ উপকারী খাদ্যদ্রব্য আজকের প্রজন্মের কাছে ক্রমেই গুরুত হারাচ্ছে।
Palm Fruits
গরমে হাঁসফাঁস, বাঁকুড়ায় দেদার বিকোচ্ছে তালশাঁস

×
Comments :0