জাতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌণ অত্যাচারের অভিযোগে এক মাসের বেশি সময় ধরে সরব আন্তর্জাতিক স্তর পদকজয়ীরা। কেন্দ্রের ক্রীড়া মন্ত্রক কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। ব্রিজভূষণ বিজেপি’র সাংসদ। দিল্লির যন্তর মন্তরে ধরনা চালিয়েছেন সাক্ষী, বিনেশরা।
মঙ্গলবার হরিদ্বারের গঙ্গায় নিজেদের আন্তর্জাতিক এবং অলিম্পেকে বিজিত পদক ভাসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কুস্তিগিররা। তাদের সেই কাজ থেকে বিরত করেন কৃষক আন্দোলনের নেতারা। তারা তাদের আশ্বস্ত করেন যে তাদের আন্দোলনের পাশে রয়েছে এবং তাদের দাবি আদায়ের জন্য কৃষকরাও লড়াই চালিয়ে যাবে।
মঙ্গলবার টিকায়েত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘‘এই ক্রীড়াবিদদের জন্যই আন্তর্জাতিক স্তরে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছি। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যাতে দেশের মাটিতে তাদের মাথা নিচু করে না থাকতে হয়।’’ সূত্রের খবর আগামীকালে মহা পঞ্চায়েতে উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, রাজস্থান এবং দিল্লির বিভিন্ন খাপ থেকে কৃষক এবং কৃষক আন্দোলনের নেতারা অংশ নেবেন।
গত জানুয়ারি মাস থেকে দিল্লির যন্তর মন্তরে ব্রিজভূষণের গ্রেপ্তারির দাবিতে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন কুস্তিগিররা। তাদের আন্দোলনের প্রতি সংঘতি জানিয়ে তাদের সাথে দেখা করেছেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাত, হান্নান মোল্লা। তাদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সহ একাধিক বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা।
উল্লেখ্য কুস্তিগিরদের এই আন্দোলন নিয়ে কখনও কোন কথা শোনা যায়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথায়। বিশ্বের সামনে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে সাক্ষী মালিকরা যখন পদক জিতে এসেছে তখন তাদের পাশে নিয়ে ছবি তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু যখন তাদের শারিরীক ভাবে হ্যানস্তা করা হচ্ছে তখন তাদের হয়ে কোন কথা বলছেন না প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার টুইটারে একটি চিঠি টুইট করেছেন সাক্ষী মালিক। তাতে তিনি লেখা ছিল, ‘‘আমাদের গলায় যেই পদক গুলি রয়েছে আজ তার আর কোন গুরুত্ব নেই। এই পদক গুলি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবলে ভিতর ভিতর আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আত্মমর্যাদা ছাড়া কোন ভাবে বেঁচে থাকা যায় না।’’ পদক জয়ীদের এই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে যে, ‘‘আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম রাষ্ট্রপতির কাছে পদক ফিরিয়ে দিয়ে আসবো, যিনি নিজে একজন মহিলা। দুই কিলোমিটার দুরে বসে তিনি সব কিছু দেখছেন শুনছেন কিন্তু কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।’’
শুধু রাষ্ট্রপতি নয় প্রধানমন্ত্রীকেও তারা নিশানা করেছেন। কুস্তিগিররা চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের তাঁর কন্যা বলে সম্বোধন করতেন। কিন্তু একবারের জন্য তার কন্যাদের কথা তিনি শোনেননি। পরিবর্তে আমরা দেখেছি যেই ব্যাক্তি আমাদের অপমান করেছে সে সাদা পোশাকে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনে উপস্থিত রয়েছেন।’’
উল্লেখ্য রবিবার দিন কুস্তিগিররা যখন হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে মার খাচ্ছেন তখন সেন্ট্রাল ভিস্তা উদ্বোধনে বিভিন্ন পোজে ছবি তুলছেন বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিং।
Comments :0