জুটমিলের ছাদ ও পাঁচিল ভেঙে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় মৃত এক ও গুরুতর আহত পাঁচ শ্রমিক। মৃত শ্রমিকের নাম নিখিল সিংহ সরদার (২২)। বাঁকুড়ার বাসিন্দা। আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে হাওড়ার ঘুসুড়ির কালীতলায় হনুমান জুটমিলের ছাদ ও পাঁচিল আচমকাই ভেঙে পড়ে। এদিন সকাল ছয়টায় মর্নিং সিফটের কাজে যোগ দিতে আসে মিলের শ্রমিকরা। অন্যান্য দিনের মতো এস ফোর লুপ ইউনিটে কর্মরত ২২ জন অস্থায়ী শ্রমিক সকালে কাজে যোগ দিতে আসতে শুরু করেন। সকালের সিফটের কাজ শুরু হয়। মিলের বিভিন্ন ইউনিটের কাজে যোগ দিতে আসছেন মিল শ্রমিকরা। আচমকাই সকাল ছয়টা পাঁচ মিনিট নাগাদ গঙ্গার ধারের মিলের পাঁচিল ও মিলের সেড ভেঙে পড়ে। ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন কাজে যোগ দিতে আসা মিল শ্রমিকরা। ছুটে এসে উদ্ধার কাজে হাত লাগান তারা। ভেঙে পড়া ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের বের করে আনার কাজে হাত লাগান। ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌছায় মালিপাঁচঘড়া থানার পুলিশ ও দমকল কর্মীরা। দমকল কর্মীদের সাথে মিল শ্রমিকরাও উদ্ধার কাজে সাহায্য করেন। কাজে যোগ দেওয়া শ্রমিকদের খোঁজ খবর নিতে শুরু করেন দমকল কর্মীরা। ধ্বংস স্তুপের ভিতরে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়ে। ধ্বংস স্তুপের ভিতরে আটকে থাকা নিখিল সিংহ সরদারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসেন হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীন ত্রিপাঠী ও হাওড়া পৌরসভার প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যান ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী। ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য আনা হয় সিভিল ডিফেন্স ফোর্স ও ডিএমজি কর্মীদের। ধ্বংসস্তূপের ভিতরে কোন শ্রমিক আটকে আছে কিনা তার জন্য চারটি জেসিসি মেসিন দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু হয়।
হনুমান জুট মিলের শ্রমিকরা জানান মিলের ভিতরে কয়েক দশক পুরাতন একটি বাড়ির উপর বেআইনি ভাবে বাড়িটির উপর নির্মান কাজ চলছিল। কোন রকম নিয়ম না মেনেই চলছিল অবৈধ নির্মাণ। তার ফলেই মিলের পাঁচিল ও শেড ভেঙে এই বিপত্তি। শ্রমিকদের অভিযোগ মিলে স্থায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা খুবই কম। অস্থায়ী ও চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিক নিয়ে মিল চালানো হয়। বারেবারে বলা সত্বেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি মিল কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের আরও অভিযোগ কোনরকম রক্ষনাবেক্ষন করা হয়না। পুরাতন মেসিন ও মিলের ঘরের অবস্থা খুবই খারাপ। যেকোনো সময়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। শ্রমিকরা জানান অস্থায়ী ও চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিকদের নিয়েই মিল চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনা ঘটলে এই সকল শ্রমিকরা কোন সুযোগ সুবিধা পান না। বিসিএম ইউ পক্ষ থেকে মিল কর্তপক্ষের কাছে দাবি জানানো হয়েছে নিহত শ্রমিকের পরিবারকে স্থায়ী শ্রমিক হিসাবে উপযুক্ত ক্ষতি পূরণ দিতে হবে ও মিলের অস্থায়ী ও চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিকদের অবিলম্বে স্থায়ী করতে হবে।
Roof Collapsed
জুটমিলের ছাদ ও পাঁচিল ভেঙে হাওড়ায় মৃত এক, আহত পাঁচ
×
Comments :0