তৃণমূলের পঞ্চায়েতের সীমাহীন দুর্নীতির প্রতিবাদে উত্তাল হল রানিগঞ্জের বাঁশড়া কয়লাঞ্চল। রেগা প্রকল্পের ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি প্রদান, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি তৈরি, পানীয় জল সরবরাহের দাবিতে আমরাসোতা গ্রাম পঞ্চায়েতে ডেপুটেশন দিল সিপিআই(এম)।
বৃহস্পতিবার বাঁশড়ার সিআইটিইউ'র কয়লা শ্রমিক ভবন থেকে মিছিল করে আমরাসোতা গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে পৌঁছায় এলাকার মানুষজন। সকাল থেকেই বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন ছিল পঞ্চায়েত দপ্তরে। এদিন লালঝাণ্ডার মিছিলের তেজের কাছে হার মেনেছে বৈশাখের তাপ প্রবাহের তেজ। তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন এলাকার মানুষজন। মহিলারা এসেছিলেন দল বেঁধে। সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত নিজেদের হকের দাবিতে গীতা বাউরির মতো অনেকেই এসেছিলেন নিজের শিশুকে কোলে নিয়েই।
চায়না বাউরি, আদি বাউরিরা ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেছেন, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে নাম লেখানোর পরও আবাস যোজনার ঘর পাইনি। একশো দিনের কাজ করেছি, এখনো টাকা পাইনি। এখন রেগা প্রকল্পের একশো দিনের কাজ নেই।’’
একশো দিনের কাজ চেয়ে সরকারি '৪-ক' ফরম ভরে আবেদন করার পরও কাজ মেলেনি জ্যোৎস্না বাউরির। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘সংসার চালাবো কি করে?’’
আদিবাসী ও নিম্নবিত্ত গরিব মানুষের সবারই একই প্রশ্ন। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, আঙুলের ছাপ মেলে না বলে রেশন কার্ড থাকা সত্ত্বেও বহু মানুষ রেশন পাচ্ছেন না। বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী সহায়ক ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে পঞ্চায়েত। তপসিলি জাতি, উপজাতির শংসাপত্র প্রদানে গড়িমসি করছে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি। কৃষকের জন্য সার, বীজ কৃষি সরঞ্জাম লুট করছে পঞ্চায়েত। জল সঙ্কটের সমাধানের কোনও উদ্যোগ নেয়নি। বাঁশড়ার মানুষ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জানকবুল লড়াই করে বুথ রক্ষা করেছিলেন। পঞ্চায়েতে বামফ্রন্ট জয়ী হয়েছিল। পরে জোর করে পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল। পরবর্তী সময়ে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে তৃণমূল পরিচালিত আমরাসোতা পঞ্চায়েত। সেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকার মানুষ।
Comments :0