নরেন্দ্র মোদী সরকার মদত দিচ্ছে ইজরায়েল আমেরিকাকে। এই মদত বন্ধ করতে হবে। স্বাধীন বিদেশনীতি নিয়ে চলতে হবে মোদী সরকারকে। মঙ্গলবার দিল্লিতে বামপন্থীদের ডাকে সভায় এই দাবি তুললেন নেতৃবৃন্দ।
এদিন সিপিআই(এম), সিপিআই, সিপিআই(এম-এল), ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি’র ডাকে সারা দেশে হয়েছে বিক্ষোভ। হয়েছে কলকাতাতেও। দিল্লির যন্তর মন্তরের সভায় বক্তব্য রেখেছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক এমএ বেবি, সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা, সিপিআই(এম-এল) সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য সহ আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতৃবৃন্দ। ছিলেন বিভিন্ন বামপন্থী গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দও।
বামপন্থী নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ইজরায়েল-আমেরিকা অক্ষের কারণেই অস্থিরতা। প্যালেস্তাইনে নির্বিচার আক্রমণ ইজরায়েল চালাচ্ছে আমেরিকার মদতে। ইরানেও বিনা প্ররোনায় হামলা চালাচ্ছে। অস্থিরতা ছড়াচ্ছে গোটা বিশ্বে। সঙ্কটের প্রভাব পড়বে ভারতেও। অথচ নরেন্দ্র মোদী সরকার ইজরায়েল-আমেরিকাকে সমর্থন করছে। বেবি বলেন, বিশ্বের সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র ইজরায়েল। গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশগুলিকে আক্রমণ করে চলেছে। এখন বিনা প্ররোচনায় হামলা করেছে ইরানের ওপর। আর সেই ইজরায়েলকে মদত দিচ্ছে ভারতের নরেন্দ্র মোদী সরকার। আমরা তারই প্রতিবাদ করছি।
বেবি বলেন, মোদীর মদতের পিছনে অন্যতম কারণ তাঁর ঘনিষ্ঠ আদানি গোষ্ঠীর স্বার্থ। আদানি গোষ্ঠী ইজরায়েলের সঙ্গে একাধিক বাণিজ্যিক প্রকল্পে জড়িত। এমনকি এদেশ হায়দরাবাদে ইজরায়েল-আদানির যৌথ মালিকানায় সংস্থা রয়েছে। এই সংস্থা ইজরায়েলে ড্রোন রপ্তানি করে ইজরায়েলে। 
বেবি বলেছেন, আমাদের দাবি ইজরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে হবে ভারতকে। 
উল্লেখ্য, ভারত বরাবর প্যালেস্তাইনের মানুষের স্বাধীনতার পক্ষে থেকেছে। পৃথক প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রের পক্ষে থেকেছে। দুই রাষ্ট্র সূত্রের পক্ষে থেকেছে। ইজরায়েলের দখলদারির বিরোধিতা করেছে। এখন নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে রাষ্ট্রসঙ্ঘে এই ভারত। গাজায় সংঘর্ষ বিরতির প্রশ্নে ভোটদানে বিরত থাকছে। ফলে মদত পাচ্ছে ইজরায়েল। তাদের আগ্রাসনের নীতির পক্ষে দাঁড়িয়েছে ভারত। এই নীতি ভারতের জনগণের পক্ষে না।
ইতিহাস ব্যাখ্যা করে বেবি বলেন, ১৯৪৮’র আগে পুরো জায়গাটা মানচিত্রে ছিল প্যালেস্তাইন। আজ ইজরায়েল-আমেরিকা চাইছে মানচিত্র থেকে প্যালেস্তাইনকে মুছে দিতে। প্যালেস্তাইনের গত কয়েক দশক ধরে দখলদারি চালিয়েছে ইজরায়েল। এখন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন গাজায় প্যালেস্তিনীয়দের হটিয়ে দিয়ে জায়গা দখল করবে। 
বেবি বলেন, ট্রাম্প এবং নেতানিয়াহু, দু’জনেরই ব্যবসায়িক স্বার্থ রয়েছে। দু’জনেই নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থেও চাইছেন গাজার জমি দখলে নিতে। বেবি মনে করিয়ে দেন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী নিজে প্যালেস্তিনীয়দের স্বাধীন রাষ্ট্রের পক্ষে সরব ছিলেন।   
বেবি বলেন, মুসলিমদের সন্ত্রাসবাদী বলে দেগে দিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। প্যালেস্তিনীয়দের মুক্তির আন্দোলনে বিভিন্ন ধারা রয়েছে। তার একটি ধারা যেমন ফাতাহ, আরেকটি ধারার প্রতিনিধি হামাস।
উল্লেখ্য ইরানে ইজরায়েলের হামলার পর দাম বাড়ছে জ্বালানি তেলের। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক বাজারে ফের ৭ শতাংশ দাম বেড়েছে। 
বেবি বলেন, বামপন্থীরা বরাবরের মতো প্যালেস্তিনীয়দের স্বাধীনতার আন্দোলনের পক্ষে সংহতি জানাচ্ছে। এই সংহতির লড়াই চলবে। আজ দিল্লিতে যেমন সভা হচ্ছে, সারা ভারতে হচ্ছে। শ্রীনগরেও এমন সভা হবে। গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, প্রগতিশীল সব অংশকে একযোগে শামিল করার কাজ চালাবে বামপন্থীরা। ভারতের মানুষ প্যালেস্তাইনের স্বাধীনতার পক্ষে।