অন্যকথা / মুক্তধারা
পূর্ণাঙ্গ দশমিক সংখ্যার প্রবর্তক
তপন কুমার বৈরাগ্য
ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানে এবং গণিতশাস্ত্রে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র
ছিলেন আর্যভট্ট।তিনি ৪৭৬খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ গুজরাটে
জন্মগ্রহণ করেন।পরবর্তী ক্ষেত্রে তিনি শিক্ষার জন্য কুসুমপুরে
এসে বসবাস করতে থাকেন।কুসুমপুর বর্তমান যুগের বিহারের
পাটনা।তার ছোটবেলায় নাম ছিল আর্যভ।তিনি নালন্দা
বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রধানও হয়েছিলেন। তিনি তরুণ বয়েসে লিখলেন আর্যভটতন্ত্র।
এটি জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ক গ্রন্থ।এটি জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ক
ভারতের প্রাচীনতম গ্রন্থ।পরিণত বয়েসে লিখলেন আর্যমহাসিদ্ধান্ত।
আর্যভট্টের আগে দশমিক বিন্দুর ব্যবহার ছিল খুবই জটিল।
বর্তমানে বহুছাত্রছাত্রী দশমিকের অঙ্ককে মনে প্রাণে গ্রহণ
করতে চায় না।কিন্তু বর্তমানে যদি আমরা আর্যাভট্টের পথ
অনুসরণ করি তবে দশমিকের অঙ্ক আমাদের কাছে অনেক
সহজ এবং সহজতর হবে।তিনিই দশমিক পদ্ধতিকে প্রথম
যথাযথভাবে তুলে ধরেন। তিনি বর্গমূল এবং ঘনমূল প্রথম
নির্ণয় করেন।শুধু তাই নয় দশমিকের বর্গমূল এবং ঘনমূল
প্রথম নির্ণয় করেন।তখন সবচেয়ে দরকার ছিল দশমিক
পদ্ধতিকে সহজ ও সরল করে তোলা।আর্যভট্ট নিজস্ব চিন্তা-
ভাবনা নিয়ে সেটা করে দেখালেন।এই কাজে তিনি পুরোপুরি
সফলও হলেন।তাই তাকে পূর্ণাঙ্গ দশমিক পদ্ধতির প্রবর্তক
বলা হয়। তার আগে গণিতে এবং জ্যোতির্বিদ্যায় এতো বড়
পন্ডিত আর ভারতে জন্মগ্রহণ করেন নি।আরো শুনলে আশ্চর্য হতে হয়, আমরা যে দশম শ্রেণিতে ত্রিকোণমিতি করি তার স্রষ্টা
ছিলেন আর্যভট্ট। ত্রিকোণমিতির সাহায্যে অঙ্ক কষে মাটি
থেকে যে কোনো বস্তুর উচ্চতা সহজেই নির্ণয় করতে পারি।
আমরা তার জন্য আরো গর্ববোধ করতে পারি কোপার্নিকাসের
বহুপূর্বেই তিনি পৃথিবীর ঘূর্ণন বিষয়ক মতবাদ এবং পৃথিবীর
গোলাকার আকৃতির কথা তুলে ধরেন। সেইসময় ভারতকে
তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞানে বিশ্বের ধরবারে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন জ্ঞানের খনি।তিনি আজ পৃথিবীর সর্বসিদ্ধান্তগুরু।
ad}
Comments :0