Md Salim Palestine

প্যালেস্তাইন সংহতি মিছিলে যোগদানের আহ্বান, ‘বাংলাদেশী’ রাজনীতিরও প্রতিবাদও সেলিমের

রাজ্য কলকাতা

প্যালেস্তাইনের সংহতিতে মিছিল থেকে পশ্চিম এশিয়ায় অস্থিরতা বন্ধের দাবি জানানো হবে। এই অস্থিরতার প্রভাব পড়ছে দেশে। 
সোমবার কলকাতায় মুজফ্‌ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক এবং পলিট ব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। মঙ্গলবার সারা দেশে বামপন্থীদের ডাকে প্যালেস্তাইনের সংহতিতে মিছিল। কলকাতাতে ধর্মতলা থেকে মিছিল করবেন বামপন্থীরা। সেলিম সব অংশকে মিছিলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
এদিন বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করার নামে দেশের নাগরিক বাংলাভাষীদের হেনস্তা করার তীব্র প্রতিবাদ করেন। রাজ্যের তৃণমূল সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। 
সেলিম বলেন, জ্বালানি তেলের বাজারে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের। তার হাত ধরে এদেশও বাড়বে জ্বালানির দাম। সারের দামও বাড়বে। বাড়বে মূল্যবৃদ্ধির বোঝা। 
পশ্চিম এশিয়ায় অস্থিরতা বন্ধে ভারতের তরফে সক্রিয়তার দাবি তোলেন তিনি।
সেলিম বলেন, গাজায় গণহত্যায় ৫৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত। এখন পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মদতে যুদ্ধ শুরু করেছে ইজরায়েল। বিনা প্ররোচনায় ইরানের ওপর হামলা চালিয়েছে। ইরানও প্রত্যাঘাত শুরু করেছে। আমরা সর্বদা যুদ্ধের বিরুদ্ধে। তেলের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। পারস্য উপসাগর দিয়ে খনিজ তেলের বেশিভাগ যায়। তার দাম বাড়ছে। আমাদের দেশে একবার দাম বেড়ে গেলে আর কমানো হয় না। জ্বালানির দামের প্রভাব অন্য সব কিছুর ওপর পড়ে। কৃষির ওপরও প্রভাব পড়বে। সার এবং জ্বালানির দাম বাড়বে। মঙ্গলবার জায়নবাদী ইজরায়েলের এই আগ্রাসী মনোভাবের প্রতিবাদ এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী মদতের বিরুদ্ধে এই মিছিল সেই কারণেও। 
সেলিম বলেন, ভারত প্রতিষ্ঠিত বিদেশনীতি থেকে সরে এসেছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে প্যালেস্তাইনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। মোদী-নেতানিয়াহুর গাঁটছড়া ভারতের পক্ষে বিপজ্জনক। 
বিধানসভায় চাকরিহারা যারা, তৃণমূলের অপকর্ম এবং মিথ্যাচার, টাকা রোজগারের মাধ্যম, তার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। 
বাংলাদেশী বলে রাজ্যের মানুষকে বিভিন্ন রাজ্যে ধরে সীমান্তের ওপারে পাঠানোর একাধিক ঘটনা রয়েছে গত কয়েকদিনের মধ্যে। এ প্রসঙ্গে সেলিম বলেন যে হরিয়ানা, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র- বিজেপি যেখানে আছে এ রাজ্যের মানুষের স্বার্থ দেখছে না। পহেলগামে কোনও বাংলাভাষী জড়িত ছিলেন না। কাশ্মীরের মানুষকে আক্রমণ করেছে। বাংলার মানুষকে বাংলাদেশী বলে বিপন্ন করতে নেমেছে। এরাজ্যে মিডিয়ার একাংশও ‘বাংলাদেশী’ রব তুলছে। এই রাজনীতি মমতা ব্যানার্জি শুরু করেছিলেন। বাংলার ভোটার তালিকায় বাংলাদেশী রয়েছে অভিযোগ তুলে স্পিকারের চেয়ারে কাগজের তাড়া ছুঁড়েছিলেন। 
সেলিম বলেন, বিজেপি-আরএসএস মনে করে বাংলাভাষী মানেই বাংলাদেশী। এদেশে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরায় যে বহু বাংলাভাষী মানুষ থাকেন তাকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়। বিজেপি আরএসএস’র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির ফল এই ধরনের পদক্ষেপ। উগ্র দক্ষিণপন্থার রাজনীতি কাউকে না কাউকে শত্রু বানিয়ে তোলে। বাংলাদেশী রব তুলে সেটিই করা হচ্ছে।
সেলিম রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস এবং তাদের সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, অতীতে রাজ্যের সাংসদরা এরকম অবস্থায় সংশ্লিষ্ট রাজ্যে যেতেন। সরকারের থেকেও সে রাজ্যের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হতো। 
তৃণমূলের সাংসদ বলেছে পরিযায়ী শ্রমিকরা দাঙ্গায় জড়িত মুর্শিদাবাদে। তারপর থেকে বিজেপি সরকারের তৎপরতা বেড়েছে। বিজেপি অপরায়ণ করে আর তৃণমূল এই মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে। 
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, সিনিয়র চিকিৎসকদেরও বদলি করেছে তৃণমূল সরকার। এটা তৃণমূল সরকারের নীতি যে সরকারী কর্মচারী, পুলিশ, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকল্প কর্মীদের ভয় দেখাতে হবে। জুনিয়র চিকিসকদের কাজের জায়গা অনুযায়ী দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতি করা হয়েছে। তাঁরা আদালতে গিয়েছেন। এটা থ্রেট কালচারের আরেকটি চেহারা। 
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, এই চাকরিহারারা অনিশ্চয়তার মধ্যে। তাঁরা অনশন, অবস্থান করছেন। আমরা সংহতি জানিয়েছি। আমরা সুষ্ঠু নিয়োগ চাইছি। দীর্ঘ সময় ধরে তার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। সরকারি নিয়োগ থেকে তৃণমূল টাকা তুলতে চেয়েছে। তার জন্যই দুর্নীতি হয়েছে। স্কুলের নিয়োগে এই দুর্নীতির শিকার চাকরিহারারা।

Comments :0

Login to leave a comment