Md Salim Social Media

নিজেদের প্রচারের জোর বাড়াতে হবে সোশাল মিডিয়াতেও, মত সেলিমের

রাজ্য

রবিবার বক্তব্য রাখছেন মহম্মদ সেলিম।

‘‘নিজেদের প্রচারের বিষয় থেকে সরে গেলে চলবে না। বামপন্থীদের তোলা বিষয় থেকে সরিয়ে নেওয়ার নানা কৌশল ব্যবহার করা হয়, হবেও। কিন্তু মুখ্য দাবিগুলিকে ধরে আঁকড়ে থাকতে হবে। মাঠে ময়দানে প্রচারের পাশাপাশি সোশাল মিডিয়ার ক্ষেত্রেও বিষয়টি মাথায় রাখা জরুরি। নিজেদের প্রচারের জোর বাড়াতে হবে সোশাল মিডিয়াতেও।’’

 সোশাল মিডিয়া সংক্রান্ত একটি মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ বক্তব্য জানিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। রবিবার কলকাতায় সত্যপ্রিয় রায় ভবনে সমাজের বিভিন্ন অংশ এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। প্রচারে বামপন্থীদের সঙ্গে গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ বিভিন্ন অংশকে জুড়ে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 

সেলিম বলেছেন, ‘‘বামপন্থীদের সংগ্রাম আন্দোলন সাফল্য মুছে দিতে চায় দক্ষিণপন্থী শক্তি। এ রাজ্যে তৃণমূল তাই করার চেষ্টা চালিয়েছে। আগে কথায় কথায় চৌত্রিশ বছর বলত বামফ্রন্ট সরকারকে হেয় করতে। এখন বলে না। দশ বারো বছরের অভিজ্ঞতায় অনেকেই বলবেন যে আগের সরকার ভালো ছিল। এই ভয়ে বলে না।’’

রাজ্যের সঙ্গে দেশেও ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্য মুছে ফেলার প্রয়াস সম্পর্কে সতর্ক করেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেন সত্তর বছরে কিছুই হয়নি, ওনার সময় থেকে শুরু হলো। ওরা ছেচল্লিশের দাঙ্গার কথা বলে কিন্তু তেতাল্লিশের মন্বন্তরের কথা বলে না। দাঙ্গা বিভাজনের স্মৃতি উসকে দেয়। আর গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকের মন্বন্তর আসলে অবিভক্ত বাংলার শেষ প্রাতিষ্ঠানিক যুথবদ্ধ স্মৃতি। মন্বন্তরে মারা গিয়েছিলেন গরিব, বঞ্চিত মানুষ। সেই প্রসঙ্গ দক্ষিণপন্থীরা তুলতে চায় না। এই স্মৃতিকে সামনে নিয়ে আসতে হবে বামপন্থী গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ অংশগুলিকেই।’’

বক্তব্য ঘুরিয়ে দিতে অন্য কোনও একটি বিষয়কে সামনে আনার কৌশল নেয় তৃণমূল বা বিজেপি’র মতো দল। খবরের কাগজ বা টেলিভিশন কেবল নয়, সোশাল মিডিয়ায় বারবার এই কৌশল দেখা যায়। সেলিম বলেছেন, ‘‘নিজেদের এজেন্ডায় লেগে থাকতে হবে। অন্য ইস্যু সামনে আনা হবে। জবাব চাওয়া হবে। কিন্তু সেই সময়ে প্রচারের মুখ্য বিষয়টি থেকে সরলে চলবে না।’’

বামপন্থী, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন মানুষকে জুড়ে নেওয়ার আহ্বান জানান সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘কেবল পোস্ট ফরওয়ার্ড করা নয়, সোশাল মিডিয়ায় অভিন্ন বক্তব্য নিজের ভাষায় বলতেও পারেন তাঁরা।’’ 

সেলিম বলেছেন, ‘‘জনতার বিভিন্ন অংশের মতো করে প্রচার পৌঁছে দেওয়াও একটি লড়াই। ভাষ্য এক রেখে অংশ অনুযায়ী ভাষার ব্যবহার দরকার। সিপিআই(এম) যে গণলাইনের কথা বলে, প্রচারের ক্ষেত্রে এভাবেই তার প্রয়োগ হওয়া জরুরি।’’

এক প্রশ্নে সেলিম বলেন, ‘‘বিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তি, তাদের শ্রেণি দৃষ্টিভঙ্গি, তাদের জনবিরোধী অবস্থান নিশ্চয় বামপন্থীরা ব্যাখ্যা করবে জনতার কাছে। কিন্তু প্রচারে আরও জরুরি নিজেদের কথা বলা। আন্দোলন লড়াইয়ের অভিজ্ঞতার কথা বলা। অন্যের তৈরি শব্দবন্ধের পিছনে ছুটলে বিকল্পের প্রচারকে জয়ী করা যায় না। সচেতনভাবে এই ফাঁদ এড়িয়ে চলতে হবে।’’ 

অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য পলাশ দাস। অংশ নেন রাজ্য কমিটির সদস্য সুদীপ সেনগুপ্ত, মধুজা সেনরায়, শতরূপ ঘোষও।

Comments :0

Login to leave a comment