BASIRHAT BADURIA

ভোটলুট, গণনায় কারচুপির জবাব দেবে বাদুরিয়া

রাজ্য লোকসভা ২০২৪

নিরাপদ সর্দারের সমর্থনে বাদুরিয়ায় রোড শো।

প্রবীর দাস

পঞ্চায়েতে ভোট দিতে দেয়নি। ভোট গননায় কারচুপি করে হারিয়ে দিয়েছে। তার প্রতিশোধ নিতে এবার নিজের ভোট নিজে দেব। 
মদিনাতলার জমায়েত থেকে পরিষ্কার বলছেন বাজিতপুরের সরযূ বিশ্বাস, ঋত্বিক বিশ্বাস, খাদেমুল সরদার, রুহুল আমিন মোল্লা, সিরাজুল মোল্লারা। বলছেন আটুরিয়ার কৃষ্ণা মণ্ডল, পূজা মণ্ডল, সামসুর মণ্ডলরা। 
বসিরহাটের নির্বাচন কেমন হবে বোঝা যাচ্ছে প্রচারের শেষবেলাতেও। ১ জুন ভোট। আবার শায়েস্তানগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের দুষ্কৃতীবাহিনী বাড়ি বাড়ি হুমকি দেওয়া শুরু করেছে। কিন্তু অত সহজে ভয় পেতে চাইছেন না বসিরহাটের বাসিন্দারা। 
‘‘অতটা গুড় আধসের নয়। এবার কড়ায় গন্ডায় বুঝে নেব। দামি দামি সরকারি গাছ বেচে এলাকা সাফ করেছ। সব হিসাব নেব’’, জানিয়েই দিচ্ছেন মায়া রায়, তরিকুল ইসলামরা।
বুধবার কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্ট প্রার্থী নিরাপদ সর্দারের সমর্থনে রোড শো হয় বাদুড়িয়ার গন্ধর্বপুর মদিনাতলা থেকে। নিরাপদ সর্দারকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রোড শোয়ে অংশ নেন সিপিআইএম নেত্রী গার্গী চ্যাটার্জি, মহম্মদ সেলিম গায়েন, আইনজীবী সব্যসাচী চ্যাটার্জি, কংগ্রেস নেতা ইয়াসির হায়দার, সালাউদ্দিন ঘরামি সহ অন্যান্য বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। 
ভোট দিতে না পারার যন্ত্রণা গোটা লোকসভা এলার সর্বত্র। ইভিএমে প্রতিশোধের স্পৃহা যেমন আছে তেমনি বঞ্চনার করুন উপাখ্যান শোনাচ্ছেন সিপিআই(এম) নেতা শঙ্কর ঘোষ। 
বাদুড়িয়ার মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে ইছামতি নদী। এপাড়ে পূঁড়া ওপারে লক্ষ্মীনাথপুর। ২০১১ সালে ২০ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছিল কংক্রিটের ব্রিজ নির্মাণে। কাজ শুরু হয়ে ব্রিজ সম্পূর্ণ হয়। দু’পাড়ের অ্যাপ্রোচ রোড সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই বামফ্রন্ট সরকার থেকে সরে যায়। অসম্পূর্ণ অবস্থায় ১৩ বছর পড়ে থেকে ব্রিজের ক্ষয় শুরু হয়েছে। 
বামফ্রন্টের আন্দোলনের চাপে ৩০ কোটি টাকা অনুমোদিত হয় ২০২৩ সালে। এক বছর পার হতে যাচ্ছে। ইছামতির ওপর পাকা সেতু আজও পেলেন না বাদুড়িয়া ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। 
সফররাজপুরে ২২ বিঘা জমিতে এমএসডিপির তত্ত্বাবধানে আইটিআই কলেজ তৈরির অনুমোদন দেয় তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। ১০ কোটি টাকা দরকার আইটিআই কলেজের জন্য। তাও পেল না বাদুড়িয়া। আইটিআই কলেজ তৈরি হলে ৬৫শতাংশ সংখ্যালঘু ও অন্যান্য অংশের মানুষ উপকৃত হতেন। 
বাদুড়িয়ার ইটশিল্প ধ্বংসের মুখে। চাষে উৎপাদন কমছে। ফসলের দাম নেই।খেতমজুরাই লিজে জমি চাষ করছেন। কৃষকরা বাধ্য হচ্ছে অন্য পেশায় যেতে। সঙ্কট জানিয়ে বলছিলেন কৃষক নেতা মহম্মদ সেলিম গায়েন। বাদুড়িয়া ব্লকের ১২০টি ইটভাটার মধ্যে মাথা তুলে আছে ৮০-৮৫টি। ইছামতির নাব্যতা হারিয়েছে। ফলে পলিমাটির জোগান কমে গেছে। কয়লার অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে। উৎপাদিত ইটের চাহিদা কমেছে গ্রামীণ অর্থনীতি ভেঙে পড়ায়। মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মানুষ কাজ হারিয়ে ভিনরাজ্যে পরিযায়ী। ২০০৯ থেকে ২০২৪। তিন-তিনজন সাংসদ তৃণমূলের। ১৫ বছরে ৭৫কোটি টাকা তাঁরা পেয়েছেন সাংসদ কোটায়। 
গায়েন বলছেন, ‘‘কী কাজ হয়েছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করার দাবি আমরা তুলেছিলাম, প্রকাশ করেনি। অথচ ১৯৮০ সাল থেকে ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত, মনোরঞ্জন শূর, অজয় চক্রবর্তীরা সাংসদ থাকাকালীন বছরে ১কোটি করে টাকা পেয়ে অসংখ্য স্কুল রাস্তা ছোট ছোট ব্রিজ হয়েছে।’’
এমন বঞ্চনারই জবাব দিতে মধ্যে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে প্রত্যাবর্তনের আওয়াজ তুলে চলছে প্রচার।

Comments :0

Login to leave a comment