শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল! সোমবার সম্ভবত ‘এক দেশ এক ভোট’ সংক্রান্ত বিল পেশ হচ্ছে না সংসদে। প্রথমে শুক্রবার যখন সংসদীয় কার্যক্রমের তালিকা প্রকাশ করে তাতে সোমবার এই সংক্রান্ত দু’টি বিল পেশের কথা উল্লেখ ছিল। বিল দু’টি হলো সংবিধান (১২৯তম সংশোধনী) বিল এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আইন (সংশোধনী) বিল। কিন্তু পরে পরিমার্জিত যে তালিকা দেওয়া হয় তাতে দেখা যায়, ওই দু’টি বিলের কথা উল্লেখ নেই। কী কারণে ওই দু’টি কার্যসূচির তালিকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তার ব্যাখ্যা মেলেনি রবিবার পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার সংবিধান (১২৯ সংশোধনী) বিল, এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আইন (সংশোধনী বিল), ২০২৪ অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা। শুক্রবার সেগুলি সাংসদদের কাছে পাঠিয়েও দেওয়া হয়। জানা যায়, সোমবারই আইন মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল বিলগুলি সংসদে পেশ করবেন। আইন মন্ত্রী বিলগুলি পেশ করার পরেই তা যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানো হতে পারে আলোচনার জন্য— এমন কথাও শোনা গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই পিছিয়ে এল সরকার। কী কারণে সরকার পিছু হঠল, খুব স্পষ্ট নয়। আবার এমনও জানা যাচ্ছে, সপ্তাহের শেষের দিকে পেশ হতে পারে ওই দু’টি বিল। সম্ভবত বিরোধীদের আক্রমণ এড়াতেই সপ্তাহের শেষ অর্থাৎ সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের অন্তিম লগ্নে পেশ হতে পারে দু’টি বিল। আবার একাংশের ধারণা, এই অধিবেশনে কৌশলগত কারণেই বিল পেশ করা নাও হতে পারে।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার বৈঠকে গোটা দেশে লোকসভা এবং সমস্ত রাজ্য বিধানসভাগুলির ভোট একসঙ্গে করার জন্য সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। তখনই মনে করা হয় যে, সংসদের চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই বিলটি পেশ করতে চায় কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় ‘এক দেশ এক ভোট’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়ার খবরে বিরোধী দলগুলি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, দেশজুড়ে একসঙ্গে নির্বাচন করার আদৌ পরিকাঠামো আছে কি না। তাহলে, সদ্য অনুষ্ঠিত চার রাজ্যের ভোট এক সঙ্গে করানো গেল না কেন? হরিয়ানা আর মহারাষ্ট্রের ভোট আলাদা আলাদা করতে হলো কেন? কেন্দ্রীয় সরকার এবং শাসক দলের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপের পক্ষে মূল যুক্তি দেওয়া হচ্ছে এক সঙ্গে ভোট হলে খরচ কমে যাবে। দ্বিতীয় দাবি, সারা বছর ধরে ভোট হওয়ায় নাকি নির্বাচনী বিধির জন্য উন্নয়নের কাজ করা যাচ্ছে না। সেই ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত, পৌরসভার ভোটও এক সঙ্গে করা উচিত বলে পালটা মত আছে। যে পথে যাচ্ছে না কেন্দ্র সরকার। তবে ‘এক দেশ, এক ভোট’ বিল নিয়ে প্রথম থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে বিরোধীরা। তাদের যুক্তি, এই বিল ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিরোধী। একই সঙ্গে সংসদীয় গণতন্ত্রেরও পরিপন্থী। ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর মাধ্যমে কেন্দ্রের এনডিএ সরকার ঘুরপথে মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মতো একটি ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে বলে অভিযোগ বিরোধী নেতৃত্বের।
Comments :0