২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) নামে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের জন্য ইউক্রেনকে অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্ভবত অস্ত্র মোতায়েন করা হবে।
এই ঘোষণাটি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচনের অল্প সময়ের পরেই এসেছে, যিনি ইউক্রেনের জন্য সমর্থন সীমাবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেন নির্বাচনের সময়, যিনি নিজেই আলোচনার জন্য চাপ দেন এবং দাবি করেন যে তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ‘‘একদিনের’’ মধ্যে শেষ করবেন। বাইডেনের এই পদক্ষেপকে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগে ইউক্রেনের জন্য যতটা সম্ভব সমর্থন দেওয়ার শেষ চেষ্টা হিসাবে দেখছে আন্তর্জাতিক মহল। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ট্রাম্পের কুখ্যাত যুদ্ধবাজ সিনেটর মার্কো রুবিওকে বেছে নেওয়ায় শান্তির প্রতি ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
ইউরোপের বাম দলগুলোও বাইডেনের সিদ্ধান্তে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এবং ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে দাঁড়ানো জার্মান দল ‘‘সাহরা ওয়াগেনকনেখট অ্যালায়েন্স: রিজন অ্যান্ড জাস্টিস’’ (বিএসডাব্লু) বলেছে যে বাইডেন ‘‘বিশ্বযুদ্ধের’’ ঝুঁকি নিচ্ছেন।
বিএসডব্লিউ বলেছে, ক্ষমতা হস্তান্তরের কিছুক্ষণ আগে মার্কিন ডেমোক্র্যাটরা আবার উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। ইউক্রেন নীতির কারণে কমলা হ্যারিস নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় তাদের কোনো শিক্ষা আছে বলে মনে হয় না। কিন্তু বেশি বেশি অস্ত্র ও টক্কর দিয়ে যুদ্ধ শেষ হবে না। যুদ্ধবিরতির জন্য সত্যিকারের আলোচনা ও উদ্যোগই কেবল তা করতে পারে! সবশেষে মৃত্যু বন্ধ করতে হবে!’’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ বছরের পর বছর ধরে রাশিয়ার "রেড লাইন" ছিল এবং যুদ্ধ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই রাশিয়া পশ্চিম সীমান্ত থেকে তার সেনা, ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক অস্ত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য ন্যাটোকে চাপ দিচ্ছিল।
রুশ কর্মকর্তারা সোমবার বাইডেনের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে দাবি করেছেন, এটি উত্তেজনার ‘আগুনে ঘি ঢালছে’। গত সেপ্টেম্বরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি স্পষ্ট রেড লাইন চিহ্নিত করে বলেছিলেন, পশ্চিমীরা যদি ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলা চালাতে দেয়, তাহলে রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। গত সেপ্টেম্বরে পুতিন বলেছিলেন, ইউক্রেনকে রাশিয়ায় হামলা চালাতে দিলে ‘সংঘাতের প্রকৃতি নাটকীয়ভাবে বদলে যাবে’। যার অর্থ হচ্ছে, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো- যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হবে।
Ukrain Russia war
রাশিয়ার বিরুদ্ধে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি ইউক্রেনকে বাইডেনের
×
Comments :0