Flower Surjo Sisir

হস্যময় ফুল ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি জঙ্গলে

জেলা

নজিরবিহীন দৃশ্য বেলপাহাড়ীর জঙ্গলে। এমন হস্যময় গোলাপী রঙের ফুল দেখেননি এলাকার অনেকেই। মাংসাশী ফুল খবর ছড়িয়ে পড়তে জঙ্গলে ভীড় করছেন সাধারণ মানুষ। মাংসাশী ফুল কেমন হয়, কীসের মাংস খায়! কৌতূহল বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে। গোলাপী রঙের ফুল। তার পাপড়িতে পোকা মাকড় জড়িয়ে রয়েছে। চেহারায় খানিকটা এক টাকার কয়েন বা পুরানো আধুলি সিকির মতো। ৫ থেকে ৮ ইঞ্চি লম্বা। আসলে এগুলি সূর্যশিশির। আমাজনের গভীর জঙ্গলের এই প্রজাতির উদ্ভিদের দেখা মেলে। পোকামাকড়ই মূলত এদের খাদ্য। আর সেই বিরল প্রজাতির উদ্ভিদের দেখা মিলল এবার ঝাড়গ্রাম জেলারব লোধাশুলির জঙ্গলে। আমাজনের জঙ্গলে থাকা সূর্যশিশির গাছ কীভাবে লোধাশুলি জঙ্গলে তা দেখে রীতিমতো তাজ্জব বনকর্তারাও। উদ্ভিদ বিদ রাজশেখর প্রামানিক বলেন, ‘‘সূর্যশিশিরের বৈজ্ঞানিক নাম ড্রসেরা বা দশেরা বার্মানি। এই মাংসাশী উদ্ভিদ প্রধানত ল্যাটেরাইট মাটিতেই হয়। আমাদের দেশে এগুলিকে সূর্যশিশির বা সান ডিউ বলা হয়। এগুলি অক্টোবর, নভেম্বর মাসে দেখা যায়। তবে লালমাটির জঙ্গলে ডিসেম্বর মাসে আচমকা এগুলির দেখা পাওয়া বেশ বিরল। তার মানে, এখানকার আবহাওয়া ওই উদ্ভিদের পক্ষে অনুকূল, তা বোঝা যাচ্ছে। আর তাদের পাপড়িতে জড়িয়ে রয়েছে উইপোকা, পিঁপড়ে সহ নানান ধরনের কীটপতঙ্গ। এদের সংস্পর্শে এলে পোকা মাকড়কে কব্জা করে নেয়। এরপর তাদের কার্যত গলিয়ে নির্যাস বের করে নিয়ে খাদ্য সংশ্লেষ করে। এই কারণে এদের মাংসাশী উদ্ভিদ বলে। "সূর্য শিশির" নামের এই মাংসাশী উদ্ভিদ নানান আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির কাজে লাগে। এদের পুড়িয়ে দিলে যে ছাই উৎপন্ন হয় তাকে স্বর্ণভস্মও বলা হয়। 
লোধাশুলি জঙ্গলের আমডাঙ্গা মৌজায় এই মাংসাশী উদ্ভিদ প্রথমে নজরে পড়ে। এরপর ঝাড়গ্রাম শহর থেকে কাঞ্চনমিলের পেছনে খানাকুল গ্রামে ঢোকার আগে ক্যানালের ধারে তাকালেই চোখে পড়বে ফুটে রয়েছে "সূর্য শিশির" নামের এই মাংসাশী গাছ। বীরভূম জেলাতেও মাঝেমধ্যে দেখা মেলে এই উদ্ভিদের। সোনামুখীর জঙ্গলে এই ব্যতিক্রমী গাছের দেখা মিলেছে। শুষ্ক আবহাওয়ায় স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে এই ধরনের গাছ জন্মায় বলে জানা গিয়েছে।  বেলপাহাড়ীর জঙ্গলে শীতের মরশুমে ‘সূর্যশিশির’ দেখতে পাওয়াটা বিরলই ঘটনাই বলে জানাচ্ছেন এলাকার মানুষ। তাদের বক্তব্য এই শীতে সূর্যশিশির গাছ পর্যটকদের কাছে এক নতুন বার্তা।

Comments :0

Login to leave a comment