KEJRIWAL ED APPROVER

কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে ইডি’র সাক্ষী টাকা দিয়েছেন বিজেপি-কে

জাতীয়

অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেই দিল্লির আবগারি কেলেঙ্কারির প্রধান চক্রান্তকারী বলছে ইডি। দিল্লির আদালতে এই অভিযোগ জানিয়েই হেপাজতে নেওয়ার জন্য চালাচ্ছে সওয়াল। ইডি’র অভিযোগের ভিত্তি এক সময়ে হেপাজতে থাকা এক ব্যবসায়ী, যিনি পরে জামিন পেয়েছেন এবং রাজসাক্ষী হয়েছেন। দেখা যাচ্ছে এই ব্যবসায়ী শরৎ রেড্ডির সংস্থা দফায় দফায় প্রায় ৫৫ কোটি টাকা নির্বাচনী বন্ডে বিজেপি’কে দিয়েছে।
শুক্রবার দিল্লির রাউস অ্যাভেনিউ আদালতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এবং ‘আপ’ নেতাকে পেশ করেছে ইডি। দশ দিনের হেপাজত চেয়েছে আদালতে। কেজরিওয়ালের আইনজীবীরা সওয়ালে হেপাজতের বিরোধিতা করে বলেছেন, এখনও পর্যন্ত দিল্লির আবগারি মামলায় কোনও তথ্য পেশ করেতে পারে ইডি। কেজরিয়ালের বিরুদ্ধেও কোনও প্রমাণ নেই। ধৃত একজন রাজসাক্ষী হয়ে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে বয়ান দিয়েছেন। এই বয়ানের ভিত্তিতে হেপাজতে নেওয়া চলে না। 
ইডি পালটা সওয়ালে বলেছে, কেজরিওয়ালের সঙ্গে হেপাজতে থাকা বাকিদের মুখোমুখি বসিয়ে প্রশ্ন করা দরকার। টাকা কোথা থেকে কোথায় গিয়েছে খুঁজে দেখার জন্যই কেজরিওয়ালকে হেপাজতে নেওয়া প্রয়োজন। ইডি’র পক্ষে সওয়াল করছেন অতিরিক্ত সলসিটর জেনারেল এসভি রাজু। তিনি আদালতে বলেছেন, এর আগে ইডি’র পাঠানো ৯টি সমন অগ্রাহ্য করেছেন কেজরিওয়াল। জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হননি।
শুক্রবার দিল্লির সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখিয়েছে আম আদমি পার্টি। আদালতে আসার আগে কেজরিওয়াল বলেছেন, ‘‘জেলে থাকি বা বাইরে, আমার জীবন দেশের জন্য উৎসর্গ করেছি।’’
শুক্রবার গোড়ায় সুপ্রিম কোর্টে কেজরিওয়ালের আইনজীবীরা জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন জানিয়েছিলেন। শীর্ষ আদালত বিশেষ বেঞ্চও গঠন করে। কিন্তু এদিনই শীর্ষ আদালতে আবগারি মামলায় অপর অভিযুক্ত এবং ইডি’র হেপাজতে থাকা কে কবিতার জামিনের আবেদন নাকচ হয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্ট কবিতাকে বিচার আদালতেই এই আবেদন জানানোর নির্দেশ দিয়েছে। এরপর কেজরিওয়ালের আইনজীবীরা জরুরি শুনানির আবেদন প্রত্যাহার করে নেন।
ইডি’র অভিযোগ, দক্ষিণ ভারতের ব্যবসায়ীদের চক্র ‘সাউথ লবি’ কবিতার মাধ্যমে টাকা দিয়েছে আম আদমি পার্টিকে। কবিতা তেলেঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিআরএস নেতা কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের কন্যা। দিল্লিতে তাদের সরকারই আবগারি নীতি চালু করে মদ বিক্রি লাইসেন্স বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল। এই টাকার একটি অংশ গোয়ার নির্বাচনে খরচ করেছে আম আদমি পার্টি। রাজু বলেছেন, অরবিন্দ কেজরিওয়ালই প্রধান চক্রান্তকারী। 
‘সাউথ লবি’-র অংশ বলে ইডি গ্রেপ্তার করেছিল শরৎ রেড্ডিকে। নির্বাচনী বন্ডের পূর্ণ তথ্য প্রকাশ হতেই দেখা গিয়েছে যে তাঁর সঙ্গে জড়িত একাধিক সংস্থা বিজেপি’র ভাণ্ডারে অন্তত ৫৫ কোটি টাকা দিয়েছে। ২১ মার্চ এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। 
শরৎ রেড্ডিকে ইডি গ্রেপ্তার করেছিল ২০২২’র নভেম্বরে। তার মধ্যে শরতের বাবা পিভি রামপ্রসাদ রেড্ডির সংস্থা অরবিন্দ ফার্মা বিজেপি-কে দিয়েছে ৫৫ কোটি টাকা। ২০২৩’র মে-তে শরৎ রেড্ডির জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেনি ইডি। রেড্ডিও এই মামলায় রাজসাক্ষী বনে গিয়েছেন!  
অরবিন্দ ফার্মার ডিরেক্টরও শরৎ রেড্ডি। ২০২৩’র নভেম্বরে আরও ২৫ কোটি টাকা তাঁর এই সংস্থা দিয়েছে বিজেপি-কে। তাঁর পরিচালনায় থাকা আরেক সংস্থা এপিএল হেলথকেয়ার দিয়েছে ১০ কোটি টাকা। দুই সংস্থার এই টাকা জমা পড়ে ২০২৩’র ৮ নভেম্বর। অরবিন্দ ফার্মার আরেক ডিরেক্টের রঘুনাথন কান্নানের মালিকানাধীন অন্য ওষুধ সংস্থা একই দিনে দেয় ১৫ কোটি টাকা।

Comments :0

Login to leave a comment