Rail Blockade

সংরক্ষিত কামরা বৃদ্ধি, ভিড় জেনারেলে, প্রতিবাদে নিত্য যাত্রীরা

রাজ্য জেলা

উত্তর রাধানগর স্টেশনে যাত্রীদের অবরোধ বিক্ষোভ।

শিয়ালদহ উত্তর দক্ষিণ এবং মেন শাখায় প্রয়োজনের তুলনায় লোকাল ট্রেনের সংখ্যা খুবই কম। দুটি ট্রেনের ব্যবধান প্রায় এক ঘন্টা। অফিস টাইমে ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে উঠতে ভোগান্তির শেষ থাকে না। তবুও ট্রেনের সংখ্যা না বাড়িয়ে সংরক্ষিত কামরা বাড়িয়ে দেওয়ায় একাংশ যাত্রীদের সমস্যা আরও বেড়েছে। জেনারেল কোচে বাড়ছে ভিড়। তারই প্রতিবাদে সোচ্চার নিত্য যাত্রীরা।
ট্রেনের সাধারণ বগির সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ায় প্রতিবাদ অবরোধ বিক্ষোভে সোচ্চার হলেন নিত্য যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার সকালে প্রায় ২ ঘন্টা রেল অবরোধের জেরে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ডায়মন্ডহারবার লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। উত্তর রাধানগর স্টেশনে নিত্যযাত্রী স্থানীয় মানুষেরা ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। রেল লাইনে স্লিপার ফেলা হয়। সকাল প্রায় পৌনে ৮টা থেকে অবরোধ বিক্ষোভ শুরু হয়। অবরোধ বিক্ষোভের জেরে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। 
উত্তর রাধানগরের বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ট্রেনের বগির সংখ্যা না বাড়িয়ে রেল কর্তৃপক্ষ ১২বগির লোকাল ট্রেনে অতিরিক্ত ২টি সংরক্ষিত বগির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। অথচ ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। তাঁদের কথায়, ১২বগির ট্রেনে আগে ২টি মহিলা সংরক্ষিত বগি ছিল। দুটি ভেন্ডার। ৮টি বগি ছিল সাধারণের জন্য। অথচ ভিড় ট্রেনে ওঠা দায় হয়। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ বগির সংখ্যা আরো ২টি কমিয়ে দেওয়া হলো। তাঁদের কথায়, আমরা মহিলা সংরক্ষিত বগি বাড়ানোর বিরুদ্ধে নই। সাধারণ বগি কমিয়ে দেওয়ায় নিত্যযাত্রীদের আরো দুর্ভোগ ও সমস্যায় পড়তে হবে। সে কারণেই ট্রেন অবরোধ বিক্ষোভ প্রতিবাদে সামিল হয়েছি। রেল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে বুধবার শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন অবরোধ বিক্ষোভ কর্মসুচি হয়। এদিনও উত্তর রাধানগর স্টেশনে অবরোধ বিক্ষোভে প্রায় ২ ঘন্টা আপ ও ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। 
নিত্য যাত্রীদের অভিযোগ, লোকাল ট্রেনে সাধারণ বগির সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। বিশেষত অফিস যাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অবিলম্বে লোকাল ট্রেনে সাধারণ বগির সংখ্যা বৃদ্ধি ও ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার নিত্য যাত্রীরা। 
রেলযাত্রায় বাড়ছে মহিলা যাত্রীদের সংখ্যা। মহিলাদের সুবিধার কথা ভেবে থ্রি ফেজ় ইএমইউ লোকালে মহিলা কামরার সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। শিয়ালদহ ডিভিশনে মেন, উত্তর এবং দক্ষিণ শাখায় লোকাল ট্রেনের দু’প্রান্তের ভেন্ডার কামরার সঙ্গে লাগোয়া কামরাটিও মহিলা কামরা করা হয়েছে ১ এপ্রিল থেকে। পূর্ব রেলের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, অফিস টাইমে শিয়ালদহ বিভাগে মোট যাত্রীদের প্রায় ২৫ শতাংশ হলেন মহিলা। বলা হয়েছে ইএমইউ লোকাল ট্রেনের দুই প্রান্তে আগে দুটি করে মহিলা কামরা ছিল। মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সেই সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। রেলের এই সিদ্ধন্তের পরেই একাধিক স্টেশনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন নিত্যযাত্রীরা। 
বিক্ষোভকারী নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য সংরক্ষিত বগি বাড়ানোর বিরুদ্ধে নই আমরা। রেলের এই সিদ্ধান্তে সাধারণ কোচের সংখ্যা কমে গেছে। সংরক্ষিত কামরাগুলি একেবারে ফাঁকা থাকলেও বেশিরভাগ মহিলারা মহিলা কামরায় ওঠেন না। নিত্যযাত্রীদের কথায়, রেল যতই মহিলা যাত্রীদের সুবিধা ও নিরাপত্তার কথা ভাবুক, তাঁরা সাধারণ কামাড়াকে বেশি সুরক্ষিত মনে করেন। যদিও মহিলা কামরায় আরপিএফ না থাকায় কারণেও তাঁরা সুরক্ষিত হতে পারেন না বলে মনে হয়। বনগাঁ শাখার এক নিত্যযাত্রীর বলেন, অনেক পরিবার মহিলা শিশুদের নিয়ে সাধারণ কামরায় উঠে পড়েন। তাদের ব্যাখ্যা একা একা গন্তব্যে পৌছাতে পারবে না, সঙ্গে কেউ না থকলে সমস্যায় পড়তে পারে এই আশঙ্কাও রয়েছে। তাই সাধারণ কামরায় সবাই উঠে পরেন। 
রেল বলছে লোকাল ট্রেনের মহিলাযাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে ২৫ শতাংশ। তার জন্য উচিত ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো। অফিস টাইমে স্টেশনগুলিতে মানুষের ভিড়। ট্রেনের সাধারণ কামরাগুলিতে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। একে অপরের গায়ে নিঃশ্বাস ফেলার অবস্থা হয়। বিশেষ করে গরমকালে খুব অস্বস্তিতে পড়তে হয়। শিয়ালদহ উত্তর দক্ষিণ এবং মেন শাখায় প্রয়োজনের তুলনায় লোকাল ট্রেনের সংখ্যা খুবই কম। দুটি ট্রেনের ব্যবধান প্রায় এক ঘন্টা। অফিস টাইমে ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে উঠতে ভোগান্তির শেষ থাকে না। আগে নয় কামড়ার ট্রেনে ওঠানামার ক্ষেত্রেও অসুবিধা ছিল। দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। সেই সঙ্গে ট্রেন বেশিক্ষণ স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকার ঘটনা ঘটেছে। সেই সমস্য কিছুটা কমেছিল বাড়ো কামরা করা পর। কিছুটা স্বাচ্ছন্দে যাতায়াত করা যাচ্ছিল। এখন আবার মহিলা কামরার সংখ্যা বাড়িয়ে কমিয়ে দেওয়া হল সাধারণ যাত্রীদের কামড়া। ১২ বগির লোকাল ট্রেনে তিনটি মহিলা কামড়া রয়েছে, রয়েছে দু'টি ভ্যান্ডার। ওই কামড়াগুলিতে সাধারণ যাত্রীদের ওঠার সুযোগ থাকে না। 
সংরক্ষিত কোচ বৃদ্ধির ফলে সাধারণ কোচের সংখ্যা কমে যাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে পুরুষ যাত্রীদের একাংশের বক্তব্য জেনারেল কোচ কমে যাওয়ায় বাকি কোচগুলিতে অত্যধিক ভিড়ের জেরে দমবন্ধের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। অফিস টাইমে অনেকে ভিড়ের জেরে ট্রেন ধরা যাচ্ছে না। যখন তখন দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। বাধ্য হয়ে অনেকেই মহিলা কামরায় উঠে পড়ছেন। তাঁদের আবার জরিমানা দিতে হচ্ছে, আশঙ্কাও থাকছে। যাত্রীদের দাবি, সাধারণ কোচের সংখ্যা কমে যাওয়ায় অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রয়োজনে কোচের সংখ্যা বাড়ানো হোক।

Comments :0

Login to leave a comment