পড়শি দেশের কমিউনিস্টরা ‘ক্ষমতা দখল’ করতে পারে এই আশঙ্কায় দেশে সামরিক আইন জারি করেও গণবিক্ষোভের মুখে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি ইউন সুক ইওল।
তীব্র রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া এবং পার্লামেন্টে দ্রুত দ্বিদলীয় ভোটের পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ভোরে সামরিক আইন প্রত্যাহার করে নেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে জারি করা এই ডিক্রি দেশকে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দেয়, সেনারা জাতীয় পরিষদ ঘিরে ফেলে এবং জনসাধারণের বিক্ষোভের সূত্রপাত করে।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইয়ুন মঙ্গলবার ঘোষণা করেন, তিনি ‘নির্লজ্জ উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে’ নির্মূল করবেন। ইয়ুন ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির’ কথা উল্লেখ করেন এবং কমিউনিস্ট গণতান্ত্রিক কোরিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল বলে বিরোধী আইনপ্রণেতাদের অভিযুক্ত করে সামরিক আইন জারি করেন। তবে স্পিকার উ ওন শিকের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পরিষদ এই পদক্ষেপকে ‘অবৈধ’ বলে নিন্দা জানায় এবং গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করে। ৩০০ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি আইনপ্রণেতাদের এই আদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত অধিবেশনে বহাল থাকার আহ্বান জানিয়েছে। ভোটাভুটির পরপরই পার্লামেন্টের বাইরে মোতায়েন সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়। উ সামরিক বাহিনীর প্রশংসা করে বলেন, ‘এমনকি সামরিক অভ্যুত্থানের দুর্ভাগ্যজনক স্মৃতি থাকা সত্ত্বেও আমাদের নাগরিকরা অবশ্যই আজকের ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করেছে এবং আমাদের সামরিক বাহিনীর পরিপক্কতা দেখেছে’।
ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক আইন তুলে নিলেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কৌঁসুলিদের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের সমালোচনা অব্যাহত রাখেন। ইয়ুনের সামরিক আইনের ডিক্রির প্রতিক্রিয়ায়, দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণ বিরোধিতায় জড়ো হয়, হাজার হাজার লোক জাতীয় পরিষদের বাইরে ‘‘সামরিক আইন বিলুপ্ত কর’’ স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ করে। ‘‘একনায়কতন্ত্র নিপাত যাক!" স্লোগান দেয়। জাতীয় পরিষদে প্রকৃতপক্ষে প্রবেশ করতে সক্ষম ১৯০ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে সকলেই সর্বসম্মতিক্রমে সামরিক আইন প্রত্যাহারের পক্ষে ভোট দেন।
সামরিক আইন ডিক্রি অনুসারে, সমাবেশ, রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম এবং শ্রম কার্যক্রম সহ ‘‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড’’ নিষিদ্ধ করা হয়।
World
জারি করেও গণবিক্ষোভের মুখে সামরিক আইন প্রত্যাহার দক্ষিণ কোরিয়ায়
×
Comments :0