Sujan Chakraborty at Purba Medinipur

যোগ্যতায় পিছিয়ে, বিজেপি ঘনিষ্ঠতার মাপকাঠিতে উপাচার্য নিয়োগ যাদবপুরে: ক্ষোভ চক্রবর্তীর

রাজ্য

Sujan Chakraborty Purba Medinipur


রামশঙ্কর চক্রবর্তী

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ্যপাল নিযুক্ত নতুন উপাচার্য বিজেপি’র ঘনিষ্ঠ। এটিই তাঁর প্রধান যোগ্যতা। দশ বছর অধ্যাপনা করার অভিজ্ঞতা তাঁর নেই। রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের নিমতৌড়িতে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। 
সিপিআই(এম) পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এসেছেন চক্রবর্তী। ছিলেন পার্টি পলিটব্যুরো সদস্য ও রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, অনাদি সাহুও। 
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একাধিক প্রশ্নের জবাব দেন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও উপাচার্য নেই। রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করছেন কে আচার্য হবেন। তারই মধ্যে ছাত্র মৃত্যুর এই ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে তা স্পষ্ট। রাজ্যপাল বাসুদেব সাউ নামে যে অধ্যাপককে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন তাঁর অধ্যাপনার কাজে দশ বছরের অভিজ্ঞতা নেই। যোগ্যতার মাপকাঠিতে যিনি পিছনে, তাঁর একমাত্র যোগ্যতা তিনি বিজেপির অধ্যাপক সংগঠন অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শিক্ষক মহাসংঘের তিনি নেতা। রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজেপি’র অনুগামীদের বেছে বেছে নিয়োগ করছেন।’’
চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আবার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ নিয়ে বেশি ভাবিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পরিকাঠামোতে নজর দেওয়াটা গুরুত্বহীন মনে করেছিলেন রেজিস্ট্রার।’’ 


চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দলীয় নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যকে প্রাধান্য দিয়ে বিজেপি আর তৃণমূল রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করছে। শুধু যাদবপুর নয় সারা রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন চলছে।’’ সেই সঙ্গে চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘উপাচার্যের দায়িত্ব যিনি নিয়েছেন তিনি যেন যথাযথভাবে প্রশাসনিক কাঠামোকে পরিচালনা করেন।"
চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মাঝ রাতে রাজ্যপালের এমন নিয়োগের পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক পদত্যাগ করেছেন। এটা কি কাকতালীয়? তা মোটেও নয়। যাকে উপাচার্য হিসাবে রাজ্যপাল নিয়োগ করেছেন তিনি কোনদিনই ওই বিভাগের প্রধান হিসেবেও কাজ করেননি। যাঁর দশ বছরের অভিজ্ঞতাও নেই তাঁকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাথায় বসানোর জন্য ওই বিভাগের ডিন পদত্যাগ করেছেন। এটা একটা নীরব প্রতিবাদ নয় কি? এই ভাবেই দেখা উচিত।"


কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী যাদবপুরে পরিদর্শনের পর মন্তব্য করেছিলেন স্লোগান দিয়ে কিছু কাজ হবে না র্যাগিং বন্ধ করতে হবে। এই প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী বলেন "উনি যা বলেছেন তা অনেক আগেই বামপন্থীরা বলেছে যে র্যা গিং মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় দরকার। বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে ঢোকা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী শুধুমাত্র যাদবপুর নিয়ে ভাবছেন। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি নিয়ে কিছু বলছেন না কেন? আইআইটি, আইআইএম, বিশ্বভারতী এই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যখন র্যা গিং হয় তখন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী নিরব থাকেন তার উত্তর তো ওঁকেই দিতে হবে।"
পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন প্রসঙ্গে করা প্রশ্নেরও জবাব দেন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের অবস্থান ছিল অত্যন্ত পরিষ্কার। বিজেপি তৃণমূল উভয়ের বিরুদ্ধেই একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে। সারা রাজ্যে তাই হয়েছে। দু’-এক জায়গায় ব্যতিক্রম হয়েছে। কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে এলাকার ইস্যুতে ভাবিত হয়ে তৃণমূলকে ঠেকাতে বিজেপিকে বা বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূলকে বোর্ড গঠনে সাহায্য করেছেন।  সেই সংখ্যাটা অত্যন্ত নগণ্য। কিন্তু তা সত্ত্বেও সিপিআই(এম)এর কোনও পঞ্চায়েত সদস্য যদি এমন করে থাকেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গৃহীত হবে। কিন্তু তৃণমূল বা বিজেপি এমনটা করতে পারবে কি?’’

Comments :0

Login to leave a comment