রাজ্যে দুই মেরুর নির্বাচন হচ্ছে না এবার। সারা দেশেও বামপন্থীদের শক্তি বাড়বে। উত্তর ভারত, পূর্ব ভারতেও বাড়বে। অনেকেই তা ভাবতে পারছেন না। বাংলাতেও ফলাফল বেরনোর পর আপনারাও বলবেন- এতো ভাবতে পারিনি।
শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও রাজ্যে এসে এখন বামপন্থী এবং কংগ্রেসের সমালোচনা করতে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।
প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা বিমান বসু বলেছেন, তৃণমূল এবং বিজেপি ২০১১’র পর থেকে রাজ্যের যা হাল করেছে তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই দুই দল বিরোধী শক্তির সমাবেশ করার চেষ্টা করেছে বামপন্থীরা। যাতে রাজ্যে বিজেপি এবং তৃণমূল, এই দুই মেরুর পরিস্থিতি ভাঙা যায়। তিনি বলেন, সেই কাজে অনেকটা এগনো গিয়েছে। এই প্রথম লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে সব আসনে সমঝোতা করে ভোট লড়ছে বামপন্থীরা।
বসু বলেন, প্রধানমন্ত্রী অমৃতকাল বলছেন প্রচারে। বলছেন ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’। তার নমুনা দেখা যাচ্ছে। মাথাপিছু আয়ে ভারত ২০১৪-তে ১২০টি দেশের মধ্যে ৫৫ নম্বরে ছিল। এখন নেমে গিয়েছে ১১১ নম্বরে। ১ শতাংশ মানুষের হাতে দেশের ৪০ শতাংশ সম্পদ। আর নিচের তলার ৫৫ শতাংশের হাতে মাত্র ৩ শতাংশ সম্পদ।
বসুর মন্তব্য, মুখে রক্ত জমে থাকলে তাকে অসুখ বলে, উন্নয়ন বলে না। উন্নয়ন করতে হলে সম্পদের বন্টন দরকার।
বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এ রাজ্যে তৃণমূলের ইশ্তেহারেও মিথ্যার ঝুলি। আরএসএস পশ্চিমবঙ্গ থেকে বামফ্রন্ট সরকারকে হটাতে কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল করেছিল। ওদেরই পরিকল্পনা, পরামর্শে তৃণমূল তৈরি হয়েছে। আরএসএস হলো তৃণমূলের দাই মা।’’
বিমান বসু বলেন, ‘‘মোদী ফের সরকার গড়লে সংবিধান বদলানো হবে। গোয়েবলসীয় প্রচার চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সমাজে বিভাজন করছেন ভোট পাওয়ার জন্য।’’
বসু বলেছেন, ‘‘তৃণমূল যে মিথ্যা প্রচার করছে তা মুখপাত্রের কথাতেই স্পষ্ট। তিনি এখন বলছেন যে ২০২১’র আগে চাকরি দুর্নীতি সম্পর্কে দল সব জানত। তাই তখন পার্থ চ্যাটার্জিকে শিক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হয়েছিল। অথচ মুখ্যমন্ত্রী বলছেন তিনি এই দুর্নীতির বিষয়ে জানতেন না। তা’হলে মন্ত্রীসভার বৈঠক করে সুপারনিউমারিক পদ তৈরি করা হলো কেন? অযোগ্যদের চাকরি রাখার জন্য এই বন্দোবস্ত করা হয়েছি, আর মুখ্যমন্ত্রী এখন গঙ্গার জলে হাত ধুয়ে ফেলতে চাইলেই হবে?’’
তিনি বলেছেন, ‘‘চাকরি নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। সন্দেশখালিতে জমি কেড়ে নিয়ে ভেড়ি করেছে। আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলকে একটি ভোটও নয়। ’’ তিনি বলেছেন, ‘‘তৃণমূল বিভাজনের রাজনীতিও করে চলেছে। ভাষার ভিত্তিতে বিভাজনও করে।’’
তাপপ্রবাহ এবং তীব্র গরমের প্রসঙ্গে পরিবেশ ধ্বংসকে দায়ী করেছেন তিনি। বিমান বসু বলেন, ‘‘গরম পড়ছে সমানে জঙ্গল সাফ করা, গাছ কাটার জন্য। তোলাবাজিতে শিল্প উঠে গিয়েছে।’’
Comments :0