প্রসান্ত সিকদার- দীপশুভ্র সান্যাল
সভায় মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, তৃণমূল এখন ডুবন্ত জাহাজে। প্রায় ডুবতে বসেছে। এখন বাঁচতে জনগনকে খড়কুটোর মতন আঁকড়ে ধরে থাকতে চাইছে। ওদের ফেলা আগুনে আপনাকে পুড়াতে চাইছে। আপনি কি সেই আগুনে পুড়ে মরতে চান?
মুখার্জি বলেন যে অটলবিহারী বাজপায়ী মন্ত্রীসভার সদস্য ছিলেন মমতা ব্যানার্জি। বাংলায় অনুপ্রবেশের অভিযোগ নিয়মিত তুলতেন তিনিই। জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি’র প্রাথমিক কাজ শুরু হয় বিজেপি’র সেই সরকারের সিদ্ধান্তের জেরেই। মমতা ব্যানার্জির এই দু’মুখো নীতি মানুষ ধরে ফেলেছেন। রাজ্যের মানুষকে আর বোকা বানান যাবে না।
তিনি বলেন তৃণমূল বিজেপি’র সাথে মিলে রেশন ব্যবস্থা উঠিয়ে দিতে চাইছে। কেন দুয়ারে রেশন দিতে হবে। রেশনের দোকান ভালভাবে চলুক। আসল কথ খাদ্যের দায়িত্ব রাজ্যসরকার নিতে চাইছে না। সব বেসরকারির হাতে তুলে দেবার চক্রান্ত চলছে। রাজ্যের শাসন ব্যবস্থা লুম্পেনদের হাতে চলে গেছে। মানুষের হাতে কাজ নেই বেকার সমস্যা, তীব্র হচ্ছে। কল কারখানা নতুন করে হচ্ছে না। ২০১১ সালের পর রাজ্যে একটা শিল্প করতে পারেনি। এমনকি একটা সেফটিপিনের কারখানা করতে পারেনি। শুধু বোমা তৈরির কারখানা খুলে চলেছে একের পর এক।
তিনি বলেন, বামপন্থীরা মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার লড়াই করে চলেছে। বহু জায়গায় মানুষ বামপন্থীদের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। আর রাজ্যের মানুষকে বিপথে চালিত করার কাজ করে চলেছে তৃণমূল সরকার। তিনি আহ্বান জানান পঞ্চায়েত নির্বাচনে এমনভাবে কাজ করুন যাতে মানুষের পঞ্চায়েত নির্বাচিত হয়। যুব কর্মীরা আপনাদের পাশে আছে।
জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য বলেন পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে ভয় পাচ্ছে তৃণমূল সরকার। আমাদের দাবি দ্রুত পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা করতে হবে। সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য পীষুষ মিশ্র, আশিস সরকার। সভায় সভাপতিত্ব করেন আবেদ আলি।
শনিবার সকালে জলপাইগুড়ির ডিবিসি রোডের সিপিআই(এম) জেলা পার্টি অফিসে এক সাংবাদিক সম্মলনে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি প্রসঙ্গে মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎকে যারা নষ্ট করেছে, তাদের ইডি, সিবিআই এর প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সিবিআই ভালো কাজে ডাকে না, নিশ্চয় চুরি দুর্নীতির খোঁজ পেয়েছে তাই ডেকেছে। তিনি বলেন, এখনও আইন আদালতের প্রতি বিশ্বাস আছে আমাদের। অভিষেকের ব্যানার্জির নাম পেয়েছে হয়তো চুরি দুর্নীতিতে। তাই আজ ডেকেছে। সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দিতে বাধ্য হয়েই গেছে অভিষেক ব্যানার্জি।
অবাধ শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবিতে মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে তুলতে এদিন ক্রান্তিতে ডিওয়াইএফআই জেলা কমিটির কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনী কর্মী সভাতে বক্তব্য রাখেন মীনাক্ষী মুখার্জী। বৃষ্টি ভেজা বিকেলে জলপাইগুড়ি জেলার ক্রান্তির চৈতন্য কালী বাড়ির মাঠে মীনাক্ষী মুখার্জীর জনসভায় মানুষের ঢল নামে। দুই শতাধিক যুব কর্মী নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষক নেতা আবেদ আলী, বক্তব্য রাখেন সারা ভারত কৃষক সভার জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক আশিষ সরকার, পার্টির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সম্পাদক মন্ডলী সদস্য পীযূষ মিশ্র, জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য, যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি। বৃষ্টি ভেজা বিকেলে প্রবল বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সভায় পার্টি নেতৃবৃন্দ ও যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জীর কথা শুনতে ভিড় জমান ক্রান্তি ও মালবাজার ব্লকের বহু মানুষ। সভাপতিত্ব করেন নুর আলম। অন্যানদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বিকাশ ঝা , জেলা সম্পাদক প্রদীপ দে, রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখার্জী। কর্মীসভায় বুথে বুথে সংগঠনকে শক্তিশালী করে ভোট লুট রুখে তৃণমূল বিজেপিতে পঞ্চায়েত থেকে দূরে রাখতে সমস্ত যুবকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান মীনাক্ষী মুখার্জী।
Comments :0