.অনিল কুণ্ডু : ক্যানিং
ক্যানিংয়ে আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক মহিলাকে ধর্ষণ ও খুন করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে ক্যানিং বাজার এলাকায় একটি লজে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওই মহিলাকে ধর্ষণ ও খুন করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় শনিবার দুপুরে নরেন্দ্রপুর এলাকা থেকে মহসিন মোল্লা নামে অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ।
ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক পরেশরাম দাসের কার্যালয় থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ওই লজে মহিলাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্যানিংয়ের সাধারণ মানুষ। ক্যানিং থানার পুলিশ লজের ওই ঘরটি সিল করে দিয়েছে। ধৃত ওই যুবককে রবিবার আদালতে তোলা হবে। তার বাড়ি ক্যানিংয়ের দাঁড়িয়া অঞ্চলের গোবরামারি গ্রামে। ঘটনার পর ক্যানিংয়ের এসডিপিও রামকুমার মণ্ডল সহ পদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা লজে যান। লজের সিসিটিভি’র ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, ক্যানিংয়ে মহিলাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্তর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সিপিআই(এম) দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক রতন বাগচী। শনিবার সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, রাজ্য জুড়ে এই সংস্কৃতি চলছে। তৃণমূলী দুর্বৃত্তরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আবাস যোজনা, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মহিলাদের উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। অপরাধীরা মনে করছে, রাজ্যে তাদের সরকার চলছে। ধৃত ওই তৃণমূল কর্মীকে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
নিহত ওই মহিলার পরিবারের অভিযোগ, আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তাঁকে ক্যানিং ১ নম্বর ব্লক দপ্তরে যাওয়ার কথা বলেছিল মহসিন মোল্লা। সেই মতো শুক্রবার বাড়ির দলিল, নগদ ৫০ হাজার টাকা, কাগজপত্র নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। গতবার আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও তাঁরা ঘর পাননি। পরে জেনেছিলেন তাঁদের নাম তালিকা থেকে কেটে দেওয়া হয়েছে। এবারে তালিকায় নাম না থাকায় তাঁকে ক্যানিং ১ নম্বর ব্লক দপ্তরে আবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলেছিল। মহসিন মোল্লা আশ্বাস দিয়েছিল, আবেদন করলেই এবারে আবাস যোজনার ঘর যাতে পান, তার ব্যবস্থা করে দেবে। এর জন্য জমির কাগজপত্র, ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলেছিল অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী। নিহত ওই মহিলার স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক। বর্তমানে তিনি ভিনরাজ্যে রয়েছেন।
ক্যানিংয়ের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অভিযুক্ত যুবক এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তার ওঠাবসা। তাঁরা জানান, শুক্রবার দুপুরে ক্যানিং বাজার এলাকায় ওই লজের ঘরে মহিলাকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়। ঘটনার পর বাজার এলাকায় এক চিকিৎসকের চেম্বারে মহিলাকে নিয়ে যায় অভিযুক্ত ওই যুবক। মহিলার মৃত্যু হয়েছে, চিকিৎসকের কাছ থেকে তা শোনার পরেই চম্পট দেয় মহসিন মোল্লা। এরপর ওই চিকিৎসক ক্যানিং থানায় খবর দিলে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে আলিপুরের মোমিনপুরে ময়নাতদন্ত করতে নিয়ে যায়।
ওই মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর পরিবারের তরফে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ক্যানিং থানায় ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নিহতর পরিবার ও স্থানীয় গ্রামবাসীরা অভিযুক্তর কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন। ৪৭ বছরের ওই মহিলাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তল্লাশি চালিয়ে এদিন নরেন্দ্রপুর এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ।
CANNING RAPE MURDER
এবার ক্যানিংয়ে মহিলাকে ধর্ষণ-খুন, ধৃত তৃণমূল কর্মী
×
Comments :0