চিঠি সরাসরি জেলা পরিদর্শককে, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের মাধ্যমে। চিঠি ধলগাঁও জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক পার্থ প্রতীম চৌধুরীর। চিঠিতে শিক্ষক পরিষ্কার বলছেন, তাঁর মার্চের বেতনে যেন ঘোষিত ৩ শতাংশ মহার্ঘভাতা যোগ না করা হয়। প্রাপ্যের চেয়ে বঞ্চনাই বেশি এই ঘোষণায়।
উত্তর দিনাজপুর জেলার ধলগাঁও জুনিয়ন হাই স্কুলের শিক্ষক চিঠিতে লিখছেন যে তিনি এই মহার্ঘভাতা নিতে অস্বীকার করছেন। তিনি লিখছেন, ‘‘... মহার্ঘভাতা প্রদানের বিষয়টি মহামান্য হাইকোর্টের বিচারাধীন এবং বর্তমান বাজার মূল্যের নিরিখে ৩ শতাংশ মহার্ঘভাতা আমার প্রাপ্যের চেয়েও আমার প্রতি বঞ্চনাকেই প্রকাশ করে।’’
রাজ্যের সরকারি কর্মচারী, শিক্ষকরা একজোটে প্রতিবাদ করেছেন আগেই। মহার্ঘভাতা বকেয়া ছিল ৩৫ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেট ভাষণের মধ্যে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কাছে এসেছিল চিরকুট। তা দেখে ঘোষণা করলেন ৩ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে মার্চ থেকে।
ঘোষণার কারণ, রাজ্যজুড়ে সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক সহ সরকারি কোষাগার থেকে বেতনপ্রাপ্তদের অনমনীয় লড়াই। লড়াই বঞ্চনার প্রতিবাদেই। সেই প্রতিবাদই ফুটে উঠেছে পার্থপ্রতীম চৌধুরীর চিঠিতে।
রাজ্যে জনতার লড়াইয়ের মনোভাব বোঝাতে গিয়ে এদিন সেই চিঠির প্রসঙ্গ তুলেছেন সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর মিথ্যাচার এবং লুট ধরা পড়ছে সরকারের মনোভাবে। কখনও বলছেন ‘দিয়ে দিয়েছি’। আবার কখনও বলছেন ‘টাকা নেই’। ৩ শতাংশের ললিপপ কেউ নিতে রাজি নন। যাঁরা বামপন্থীদের সঙ্গে নন, তৃণমূলের পক্ষ অতীতে নিয়েছিলেন, তাঁরাও এই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন।’’
সরকারি কর্মীদের ডিএ বনাম অন্য অংশের ভাতা। সরাসরি শ্রমজীবীকে ভাগ করার কৌশলে এমনই প্রচার করছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেস। সেলিম মনে করিয়েছেন যে একশো দিনের কাজেরও মজুরি মেলে না। টাকা লোপাট করা হয়। পঞ্চায়েত-পৌরসভার অর্থ লোপাট হচ্ছে। ডিএ’র টাকাও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।’’
শিক্ষক পার্থপ্রতীম চৌধুরীর চিঠিতে ক্ষোভ, ‘‘অতএব মহাশয় ওই ৩ শতাংশ মহার্ঘভাতা যা সরকার দ্বারা মার্চ মাস থেকে প্রদান করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করছি এবং আবেদন রাখছি মার্চ মাস থেকে আমার বেতন তালিকায় যেন ওই অতিরিক্ত ৩ শতাংশ মহার্ঘভাতা যুক্ত করা না হয়।’’
সরকারি কর্মচারীরা একজোটে ১০ মার্চ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। হামলার মুখেও হয়েছে কর্মবিরতি। মিলেছে বিপুল সাড়া। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আবার ধর্মঘটের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন।
সেলিম বলেছেন, ‘‘ধর্মঘট হয়েছে ব্রিটিশ ভারতেও। ব্রিটিশ প্রশাসনও ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি। ধর্মঘটের অধিকার অস্বীকার করার অর্থ সাংবিধানিক অধিকার অস্বীকার করা।’’
Comments :0