শিক্ষক নিয়োগ আটকে রেখেছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে নিয়োগে সমস্যার কারণই নেই, দ্রুত নিয়োগ সম্ভব। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেছেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। সরকারি তথ্য তুলে তিনি বলেছেন, ‘‘রাজ্যে খালি রয়েছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার শিক্ষক পদ। মাত্র ১১ হাজার পদে নিয়োগের ঘোষণা করছে সরকার, মোটের মাত্র ৪.৪ শতাংশ।’’
নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষকদের সঙ্গে সরকার এবং পুলিশের আচরণের কড়া সমালোচনা করেন তিনি। এদিন মুজফ্ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘ক্রিমিনালরা সরকারের মাথায় বসে রয়েছে। আর যারা সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখেছে, শিক্ষক হতে চায়, তাঁদের সঙ্গে ক্রিমিনালের মতো আচরণ করা হচ্ছে।’’
২২ মার্চে শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিধানসভায় জানিয়েছিলেন যে গোটা রাজ্যে ২.৫ লক্ষ শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। সেই নথিই পড়ে শোনা চক্রবর্তী। শিক্ষা মন্ত্রীর বিধানসভায় আরও জানিয়েছিলেন যে সরকার শিক্ষকের পদ খালি রাখবে না। এই প্রসঙ্গ টেনে এদিন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সাত আট মাস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও কেন কোন নিয়োগ হলো না। খালি থাকা পদের মাত্র ৪.৪ শতাংশ পদে নিয়োগের কথা বলছে সরকার। এই ১১ হাজারের মধ্যে ২০১৪, ২০১৭ সালের টেট পাশ করা চাকরি প্রার্থীরা রয়েছে। তাছাড়া এখন যারা পরীক্ষা দিচ্ছে তারাও রয়েছে। তাহলে এত জন চাকরি প্রার্থীর জন্য কেন এতো কম নিয়োগ?’’
চক্রবর্তী মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘গোটা বাংলায় টেট পাশ প্রশিক্ষিত যুবক-যুবতীর সংখ্যা প্রায় ৪০,০০০ হাজার। সরকার ১১ হাজার নিয়োগের কথা বলে আসলে চাকরি প্রার্থীদের একটা অসম প্রতিযোগিতায় নামিয়ে দিচ্ছে। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে সাতদিনের মধ্যে নিয়োগ সম্ভব।’’
মুখ্যমন্ত্রী সহ তৃণমূল বলে চলেছে যে মামলার কারণে চাকরি আটকে রয়েছে। সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূলভুল বোঝাচ্ছে। ছয় সাত বছর ধরে কেন কোনও শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়নি সেই কথা আগে সরকার বলুক। আদালতে মামলা করে কোনও পরীক্ষা আটকানো হয়নি।’’
চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যেটুকু নিয়োগ হয়েছে তা মুখ্যত টাকার বিনিময়ে। তাতে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের পক্ষে ভালো নয়। বদলিতেও টাকার লেনদেন হয়েছে। বহু স্কুল আছে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা হাজারের বেশি। শিক্ষক কয়েকজন। আবার কলকাতার উপকণ্ঠে ছাত্রসংখ্যার তুলনায় বেশি শিক্ষককে রাখা হয়েছে’’। তাঁর খেদ, ‘‘কয়েকজন শিক্ষককেৃ ব্যস্ত রাখা হচ্ছে সাইকেল গোনা, পোষাক আনার মতো কাজে। ক্লাস নেওয়ার সুযোগ রাখছে না রাজ্য সরকার। আসলে রাজ্য সরকার চাইছে বেসরকারি স্কুলে ভর্তি বাড়ুক।’’
Comments :0