২ কোটি মানুষ রাত জেগেছেন। তা বিফলে যাবে না। বিচার ছিনিয়ে আনতে হয়। সেই লড়াই জারি থাকবে।
আরজি কর কাণ্ডে নিম্ন আদালতের রায় প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। রবিবার কলকাতায় মুজফ্ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে মেদিনীপুর মেডিক্যাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষাক্ত-জাল স্যালাইন সরবরাহের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। দায় চাপিয়ে শাস্তি দেওয়া হলো চিকিৎসকদের। এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সংহতিতে আন্দোলনকে সমর্থন জানাচ্ছে পার্টি।
গত শনিবার শিয়ালদহ আদালত আরজি কর কান্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কেই কেবল দোষী সাব্যস্ত করেছে। সোমবার সাজা ঘোষণা করবেন বিচারপতি অনির্বাণ দাস। কিন্তু প্রতিবাদীদের যৌথ মঞ্চ অভয়া মঞ্চ এবং জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স'র সদস্যরা প্রথম থেকেই বলে আসছেন সঞ্জয় একা দোষী নয়। দুর্নীতি দুষ্কৃতী চক্র এবং যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে তাঁদের মাথাদের তদন্তের আওতায় এনে বিচার প্রক্রিয়া চালু করতে হবে।
আর জি কর প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘বিচার এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। বিচারের জন্যই মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন। ২ কোটি মানুষ রাত জেগেছিলেন গোটা রাজ্য জুড়ে। সেটা বিফলে যাবে না। আন্দোলন চলবে। চিকিৎসক, ছাত্র, যুব, মহিলা, শ্রমিক, কৃষক, কর্মচারী সাধারণ মানুষ সবাই মিলে বিচার ছিনিয়ে আনব।’’
তিনি বলেন, ‘‘নিম্ন আদালত বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত হয়। আমরা দেখেছিলাম বগটুই কাণ্ডে যখন তৃণমূল তৃণমূলকে মেরেছিল, সে সময় হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল পাশের জেলার বিচারককে দায়িত্বভার দেয়।’’
এদিন সেলিম বলেন, "গত এক দশক ধরে রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে গণতান্ত্রিক পরিবেশকে বিনষ্ট করে থ্রেট কালচারকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। চলছে দুর্নীতি। যার ফলে আরজি কর হাসপাতালে মতো ঘটনা ঘটেছে। গোটা রাজ্যে নারী নিরাপত্তা বিঘ্নিত। আরজি কর হাসপাতালের ভিতরেই ডিউটিরত পিজিটির ধর্ষণ ও খুন হয়। আমরা প্রথম দিন থেকে বলছিলাম এই ঘটনায় স্বাস্থ্য দপ্তর, পুলিশ, পুলিশ কমিশনার এবং অধ্যক্ষ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
সেলিম আরও বলেন, "যখন হাইকোর্ট সিবিআইকে তদন্ত ভার হস্তান্তর করে তখন চেয়েছিলাম কর্মরত বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হোক। সিবিআই-ও তাঁর যোগ্যতা হারিয়েছে। রাজনীতির স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে। তৃণমূল ও বিজেপির যোগসাজসের উদাহরণ সিবিআই’র এই ভূমিকা। তার ফলে অপরাধ জগতের বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে।’’
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে জাল স্যালাইনে প্রসূতিমৃত্যুর পর মুখ্যমন্ত্রী সাসপেন্ড করেছেন চিকিৎসকদেরই। তার তীব্র সমালোচনা করেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘কর্নাটকে এই স্যালাইন নিষিদ্ধ হয়। তারপরও রাজ্যে তার সরবরাহ চলেছে। আবার কেন্দ্রও সেই অনুমতি দিয়েছে। তৃণমূল এবং বিজেপি’র যোগসাজশ ফের স্পষ্ট।’’ সেলিম ফের বলেছেন যে জাল স্যালাইনের সরবরাহের সঙ্গে পিসি-ভাইপোর কাটমানির সম্পর্ক রয়েছে।
সাসপেনশনের বিরুদ্ধে সব স্তরের চিকিৎসকরা আন্দোলনে শামিল রয়েছেন। সেলিম বলেছেন যে এই আন্দোলনকে পূর্ণ সংহতি জানাচ্ছে সিপিআই(এম)। বামপন্থী ছাত্র-যুব-মহিলারা প্রথম দিন থেকেই আন্দোলনে রয়েছে। এই লড়াই চলবে।
RG Kar Student Death
জারি থাকবে বিচার ছিনিয়ে আনার লড়াই: সেলিম
×
Comments :0