'এখনই নিঃশর্ত স্থায়ী সংঘর্ষ বিরতি করতে হবে গাজায়’। মূল এই বক্তব্যে প্রস্তাব পেশ হয়েছিল রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে। প্রস্তাব পাশ আটকে গিয়েছে আমেরিকার বিরোধিতায়।
বুধবার রাষ্ট্রসঙ্ঘে ‘ভেটো’ বা বিরোধিতা জানিয়ে ভোট দেয় আমেরিকা। ১৫ স্থায়ী সদস্য দেশের নিরাপত্তা পরিষদে কোনও একটি দেশ ভেটো দিলেও আটকে যায় প্রস্তাব।
আমেরিকার অজুহাত, গাজায় হামাসের নিন্দা করা হয়নি প্রস্তাবে। গাজা ভূখণ্ড ছেড়ে জেতে বলা হয়নি হামাসকেও। তাই এই প্রস্তাবে সমর্থন জানানো হয়নি।
প্রস্তাবের বয়ানে সংঘর্ষ বিরতির সঙ্গে নিঃশর্তে বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার কথাও বলা ছিল।
নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকার ভূমিকায় স্পষ্ট দু’টি দিকই। এক, ইজরায়েলের অমানবিক সামরিক আক্রমণের প্রধান মদতদাতা আমেরিকাই।
দুই, ইজরায়েলের পাশাপাশি আমেরিকাও গাজার প্রশ্নে নিঃসঙ্গ আন্তর্জাতিক স্তরে। এমনকি আমেরিকার পশ্চিমী সঙ্গী যে দেশগুলি ইজরায়েলকে মদত জোগায়, তাদেরও এই প্রস্তাবকে সমর্থন করতে হয়েছিল। ১৪ দেশ পক্ষে ভোট দিলেও দেয়নি কেবল আমেরিকাই।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রস্তাব পাশ হলে ত্রাণ আটকে গাজার নিরস্ত্র মানুষকে অসহায় করার নীতিতেও সমস্যা হতো। কারণ প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ‘বিধস্ত গাজায় ত্রাণ সরবরাহের ওপর সব বিধিনিষেধ বাতিল করতে হবে এখনই’।
গাজায় টানা কয়েক মাস ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রেখেছে ইজরায়েল। শিশুদের অবস্থা ভয়াবহ। দুর্ভিক্ষ এবং মহামারীর আশঙ্কা বারবারই জানিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ, জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ত্রাণ সংগঠন। ইজরায়েল-আমেরিকা ত্রাণের দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সংগঠনের থেকে কেড়ে নিজেদের পছন্দের একটি সংগঠনকে দিয়েছে। গত রবিবার ত্রাণ কেন্দ্রে গুলিও চালিয়েছে ইজরায়েল। পরপর তিনদিন ত্রাণকেন্দ্রে ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর হয়েছে হামলা।
নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকার প্রতিনিধি ডরোথি শেয়া বলেছেন, ‘‘এই প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। হামাসকে নিরস্ত্র হত বলা হয়নি। হামাসকে গাজা ভূখণ্ড ছেড়েও যেতে বলা হয়নি।’‘
রাষ্ট্রসঙ্ঘের ত্রাণ বিভাগের প্রধান টম ফ্লেচার বলেছেন, ‘‘সারা বিশ্ব দেখছে দিনের পর দিন প্যালেস্তাইনের ভয়াবহ সব দৃশ্য। দেখছে ত্রাণ শিবিরে খাবারের জন্য পৌঁছানো ক্ষুধার্ত মানুষকে গুলি করা হচ্ছে।’’
US Veto Gaza
গাজার প্রস্তাবে ভেটো, রাষ্ট্রসঙ্ঘে একেবারে একা আমেরিকা

×
Comments :0