সোনারপুরে বন্ধুর বাড়িতে লাল্টু হাজরা নামে বছর ছাব্বিশের এক যুবককে গুলি করে খুনের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়ে চম্পট দেয়। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে সোনারপুর থানার কামরাবাদ রেল গেটের কাছে। এই খুনের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের প্রাথমিক অনুমান, পুরানো বিবাদের জেরে এই খুন। তবে কী নিয়ে বিবাদ, সে সম্পর্কে তাঁরা কিছু জানাতে পারেননি শনিবার রাত পর্যন্ত। তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে সোনারপুরে খুনের ঘটনায় সিপিআই(এম) দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ী এক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই রাজ্য চালাচ্ছে অপরাধীরা। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। তৃণমূলকে বিদায় করতে না পারলে কোনও মানুষই নিরাপদ নন।
বারুইপুর পুলিশ জেলার এক আধিকারিক শনিবার জানিয়েছেন, লাল্টু হাজরা নামে ওই যুবকের দেহ তারই বন্ধু ময়ুখ ভট্টাচার্যর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান। নিহত যুবক রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলেরহাট এলাকার বাসিন্দা। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোল ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ওই আধিকারিক জানান, খুব কাছ থেকে লাল্টু হাজরার পেটে গুলি চালানো হয়েছে। তাঁর ডান হাতের আঙুলে গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে।
এই ঘটনা সম্পর্কে বিশ্বনাথ সরকার নামে আরেক যুবকের কাছ থেকে কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তিনি ময়ুখ ও লাল্টু উভয়েরই বন্ধু। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে ময়ুখের বাড়িতে তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন লাল্টু। ফোনে লাল্টু তাঁকে বলেছিলেন, ওই বাড়িতে একা আছেন। ফোন পেয়ে তিনি ওই বাড়িতে যান সেই রাতেই। গিয়ে দেখতে পান, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন লাল্টু হাজরা। সোনারপুর থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবকের রক্তাক্ত নিথর দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কামরাবাদের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ময়ুখ ভট্টাচার্য সহ ৪ বন্ধু প্রায়ই এই ফাঁকা বাড়িতে থাকতেন। পেশায় আইনজীবী ময়ুখ ভট্টাচার্য পাটুলির বাসিন্দা হলেও তাঁর দখলে থাকা এই বাড়িতে শুক্রবার রাতে একাই ছিলেন লাল্টু। দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়ে তাঁকে খুন করে। এলাকার বাসিন্দারা আরও জানিয়েছেন, নিহত ওই যুবক তৃণমূল সমর্থক। বন্ধুদের নিজেদের মধ্যে বিবাদের জেরে এই খুন কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা। নিহত যুবকের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। তবে খুনের ঘটনায় শনিবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
Comments :0