Anubrata Mondal

ফিরলেন অনুব্রত, প্রশ্ন থাকছে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে

রাজ্য

গরু পাচার মামলায় প্রায় দু’বছর জেলে থাকার পর বোলপুরে নিজের বাড়িতে ফিরলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে গরু পাচার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। একাধিক বার অনুব্রতকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি হাজিরা দেননি। এড়িয়ে গিয়েছিলেন বার বার। অবশেষে ২০২২ এর আগস্ট মাসে তার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। প্রথম আসানসোল জেলে অনুব্রতকে রাখা হলেও পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় তিহার জেলে। সেখানেই ছিলেন তিনি। এই একই মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যাও। বাবা, মেয়ে দুজনেই ইডি এবং সিবিআই দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থার মামলা থেকে জামিন পেয়েছেন। 
আদালতের কাছে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমান পেশ করতে পারেনি সিবিআই এবং ইডি দুজনেই। যার জন্য জামিন হয় তার। অনুব্রতর বিরুদ্ধে শুধু গরু পাচার নয়, লটারির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার অভিযোগও আছে। অনুব্রত এবং তার মেয়ের অ্যাকাউন্টে যে গরু পাচারের কালো টাকা ঢুকেছে লটারির মাধ্যমে তা সামনে এসেছিল এই তদন্তের সময়। দুর্নীতির পর্যাপ্ত প্রমান থাকলেও শাস্তি হচ্ছে না কারুর।
এখানেই প্রশ্ন উঠছে যেই সিবিআই ইডি বার বার দাবি করে এসেছে যে তাদের কাছে পর্যাপ্ত প্রমান রয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে তাহলে কেন প্রমানের অভাবে তার জামিন হলো। শুধু অনুব্রত নয় মূল অভিযুক্ত এনামুল হকও কাল জামিন পেয়েছেন।
রাজ্যের একাধিক দুর্নীতি মামলার তদন্ত করছে সিবিআই, ইডি। এখনও পর্যন্ত একটা মামলাতেও দোষীরা শাস্তি পায়নি। যেমনটা হয়েছে সারদা, রোজভ্যালির ক্ষেত্রে। জামিনে বাইরে ঘুরে বেরাচ্ছেন কুণাল ঘোষ, সুদীপ বন্দোপাধ্যায়, মদন মিত্ররা। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। মানিক প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান থাকার সময় যে টাকার বিনিময় চাকরি হয়েছে তা স্পষ্ট, কিন্তু তাও সে জামিন পেয়েছে। 
বামপন্থীরা বার বার দাবি করে এসেছে যে সেটিং রয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির দায় গ্রেপ্তার হবেন তৃণমূল নেতারা। দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চলবে। মানুষকে বিভ্রান্তির মধ্যে রাখা হবে তার পর প্রমানের অভাবে জামিন পাবেন অভিযুক্তরা।
যেই অনুব্রতকে দেখে লোকে আদালতে গরু চোর বলেছিল সেই অনুব্রতকে ‘ওয়াই ক্যাটেগোরি’ নিরাপত্তা দিয়ে কলকাতা থেকে বীরভূম নিয়ে আসে রাজ্য সরকার।
এদিন বীরভূমে ফেরার পথে বর্ধমান পার করে একটি জায়গায় কিছুক্ষণের জন্য থামে অনুব্রতর গাড়ি। পায়ে ও কোমরে ব্যথার কথাও জানান। তিনি বললেন, “আমি আদালতকে সম্মান করি, আইন মেনে চলি।” সঙ্গে এ কথাও বললেন, “দিদির জন্য আছি, বরাবরই থাকব।” 
মমতারও মঙ্গলবার বীরভূম জেলায় প্রশাসনিক কর্মসূচি রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আবহে বীরভূমে প্রশাসনিক বৈঠক  রয়েছে তাঁর। ঠিক সেই দিনেই কারামুক্তির পর বীরভূমে ফিরছেন অনুব্রত। দলনেত্রীর সঙ্গে কি মঙ্গলবার সাক্ষাৎ হবে অনুব্রতর?   অনুব্রতকে সে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করায় তিনি জানান, শরীর ভাল থাকলে দেখা হবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে।

Comments :0

Login to leave a comment