তিনদিনে তিনবার। ফের গাজায় ক্ষুধার্ত জনতার ওপর গুলি চালালো ইজরায়েলের সেনা। মঙ্গলবার খাবারের সারিতে দাঁড়ানো মানুষের ওপর চালানো গুলিতে নিহত হয়েছেন ২৭ প্যালেস্তিনীয়।
গাজায় এখন বিকল্প দু’টি। হয় না খেয়ে মৃত্যু, নয়তো ইজরায়েলের সেনার গুলিতে মৃত্যু।
ইজরায়েলের সেনা নির্লিপ্ত। সেনার যুক্তি, নির্দিষ্ট জায়গার বাইরে গিয়ে একাংশ ত্রাণ জোগার করা চেষ্টা করছিল। তাদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের স্থানীয় মুখপাত্র হিসাম মহান্না মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে রাফায় ফিল্ড হাসপাতালে ১৮৪ জনকে ভর্তি করা হয়। ১৯ জনকে সেখানেই মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে খান ইউনিসে নাসের হাসপাতালে নিয়ে আসার পর। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মুখপাত্র জানিয়েছেন নিহতদের মধ্যে ৩ শিশু এবং ২ মহিলাও রয়েছে।
রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং অন্য আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংগঠনের হাত থেকে দায়িত্ব কেড়ে নিয়েছে ইজরায়েল এবং আমেরিকা। তার আগে টানা কয়েকমাস ত্রাণ আটকে রেখেছে ইজরায়েলের সেনা। গাজায় দুর্ভিষের পরিস্থিতি চলছে।
মঙ্গলবার ইজরায়েলের সেনা বলেছে, হামাসের তৎপরতা বন্ধ করার জন্য ত্রাণের নির্দিষ্ট ‘সামরিক এলাকা’ করা হয়েছে। সেখানে সেনার পাহারা রয়েছে। ত্রাণ এই জায়গা থেকেই নিতে হবে।
বাস্তবে, বিপুল অংশের জন্য সামান্য ত্রাণের ব্যবস্থা থাকায় উদভ্রান্ত মানুষ কোনোমতে খাবারের জন্য ছুটছেন। সবচেয়ে চিন্তা বাড়ির শিশুদের জন্য। বহু জায়গায় ত্রাণের দীর্ঘ সারিতে শিশুরাই ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে খালি হাতে ফিরছে শিশুরা।
আমেরিকা এবং ইজরায়লের ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ গুলি চালানোর ঘটনাও অস্বীকার করেছে সংবাদমাধ্যমে। তবে মঙ্গলবার বলেছে যে সেনা তদন্ত চালিয়ে দেখেছে যে কেউ আহত হয়েছে কিনা।
গাজার দক্ষিণে, মিশরের সীমান্তের কাছে, রাফায় গুলি চালিয়েছে ইজরায়েলের সেনা। পুরো এলাকাই দখলে নিয়েছে সেনা। সাংবাদিকদের এই এলাকায় ঢোকার অধিকার নেই।
রাফা থেকে উচ্ছেদ হওয়া ইয়াসের আবু লুবদা বলেছেন, মঙ্গলবার ভোর চারেটয় গুলি চালানো হয়েছে ত্রাণের সারিতে। বহু মানুষ মারা গিয়েছেন। আহত আরও বেশি।
ত্রাণের অবস্থা কতটা ভয়াবহ জানিয়েছেন খান ইউনিসের বাসিন্দা নেইমা আল আরাজ। তিনি বলেছেন, কোনোক্রমে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর দেখা গিয়েছে একবিন্দুও আমাদের জন্য নেই।
Gaza Aid Firing
ফের খাবারের লাইনে গুলি, গাজায় শিশু মহিলা সহ নিহত ২৭

×
Comments :0