ফ্রেঞ্চ ফুটবল ফেডারেশনের (এফএফএফ) সভাপতি নোয়েল লে গ্রেট আগে দাবি করেছিলেন যে ফ্রান্স ২০২২ বিশ্বকাপের ওপর কোচ দিদিয়ের দেশঁর ভাগ্য নির্ধারিত হবে। ভেসে উঠছিল জিনেদিন জিদানের নাম। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে পরাজিত করার পর মনে করা হচ্ছে দেশঁই থাকতে চলেছেন।
ইংল্যান্ড ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে দেশঁ বলেন, ‘‘প্রতিটা জিনিসের নিজেস্ব সময় আছে। ফেডারেশনের সভাপতির উদ্দেশ্য সঠিক। বিশ্বের চারটি সেরা দলের মধ্যে আবারও আমরা পৌঁছেছি। এতে শুধু তিনি বা আমি নই ফ্রান্সের মানুষও খুশি। আমরা এই মুহূর্তে মরক্কো ম্যাচ ছাড়া কিছু ভাবছি না।’’
চতুর্থ এবং শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে ইংরেজদের প্রতিহত করে কাতারের আল বায়াত স্টেডিয়ামে ফরাসি আতর ছড়ালেন এমবাপেরা। শনিবার রাতে খেলায় আধিপত্য বিস্তার করেছিল ইংল্যান্ডই। কিন্তু দুটো পেনাল্টি পেলেও তার মধ্যে একবারই জালে বল জড়াতে পেরেছিলেন ইংরেজ অধিনায়ক হ্যারি কেন। ফ্রান্সের হয়ে গোল দুটি করেছিলেন চুয়োমিনি এবং জিরু।
ফ্রান্স জেতার পর টুইটারে এমবাপেকে ট্যাগ করে মরক্কোর আসরফ হাকিমি লিখেছেন, ‘‘তোমার সঙ্গে দেখা হচ্ছে বন্ধু।’’ তার উত্তরে এমবাপে শুধু তিনটি ভালোবাসার চিহ্ন দিয়েছেন। এমবাপে সাধারণত ফ্রান্সের বাঁ প্রান্ত ধরে খেলেন। অন্য দিকে মরক্কোর রাইট ব্যাক হাকিমি। অর্থাৎ, তাঁর কাঁধেই দায়িত্ব থাকবে এমবাপেকে আটকানোর। খেলার আগেই তাই এমবাপেকে বার্তা দিয়ে রাখলেন হাকিমি। ক্লাবে একসঙ্গে খেলেন দু’জনে। বিশ্বকাপের মঞ্চে আবার প্রতিপক্ষ। সেমিফাইনালে একে অপরের বিরুদ্ধে মাঠে নামবেন তাঁরা।
মরক্কোর অন্যতম আশ্বাস আসরফ হাকিমি। শেষ ষোলোয় স্পেনের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে তিনিই শেষ গোলটি করেছিলেন মরক্কোর হয়ে। সেই জয়ের পরে হাকিমির প্রশংসা করেছিলেন এমবাপেও। এ বার তাঁরা মুখোমুখি। পর পর দু’বার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠতে গেলে ক্লাবের সতীর্থকে ছাপিয়ে যেতে হবে ফরাসি ১০ নম্বরকে।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনাল বাদ দিলে এ বারের বিশ্বকাপে দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন কিলিয়ান এমবাপে। ফ্রান্সের হয়ে পাঁচটি গোল করে ফেলেছেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে গোল করতে না পারলেও প্রথম গোলের খেলা তৈরি হয়েছিল তাঁর পা থেকেই। এমবাপের জন্য বার বার চাপ তৈরি হচ্ছিল ইংল্যান্ডের রক্ষণে। সেমিফাইনালেও ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশঁর তুরুপের তাস তিনিই।
এখনও পর্যন্ত একটি ম্যাচেও হারেনি মরক্কো। গোটা প্রতিযোগিতায় গোল খেয়েছে মাত্র ১টি। তাও আত্মঘাতী। কাতার বিশ্বকাপের কালো ঘোড়ারা ছিল ক্রোয়েশিয়া, বেলজিয়ামের গ্রুপে। কেউ আশা করেনি, গ্রুপ পর্ব টপকাতে পারবে তারা। সেই মরক্কো গ্রুপ শীর্ষে থেকেই প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে। গত বার তৃতীয় স্থান পাওয়া বেলজিয়ামকে হারিয়েছে। গত বারের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে ড্র করেছে। শেষ ষোলোয় হারিয়েছে প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনকে। আর কোয়ার্টার ফাইনালে শেষ করে দিয়েছে রোনাল্ডোর স্বপ্ন।
দেঁশ সতর্ক। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে মরক্কো সম্পর্কে বলেছেন, খুব ভালো খেলছে ওরা। ওরাও ফাইনালে যেতে পারে। ‘জিতে গেছি’ এমন কোনও মানসিকতা নেই ফ্রান্সের।
Comments :0