Purulia

স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে পুরুলিয়া স্টেশনে ঘুরছেন স্বামী

জেলা

অমানবিক। মৃত স্ত্রীর দেহ কাঁধে তুলে স্টেশনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন স্বামী। রেল চত্বর থেকে মৃতদেহ সরিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জিআরপির বিরুদ্ধে। বাধ্য হয়ে সেই অসহায় স্বামী স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে তুলে নিয়ে স্টেশন থেকে বের হয়ে যাচ্ছিলেন। সোমবার  দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা চান্ডিল শাখায় বরাভূম স্টেশনের এই ছবি সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে  একজনকে হেঁটে বেরোতে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় মানুষজন। জিআরপিকে চাপ দেওয়ার সাথে সাথে জিআরপি তখন বাধ্য হয়ে ওই মহিলার মৃতদেহ পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায় ময়না তদন্তের জন্য। এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষ মুখে কুলুপ এঁটেছে। 
পুরুলিয়া শহরে গোশালার কাছে একটি বস্তিতে থাকেন মনোজ কর্মকার এবং তাঁর স্ত্রী শান্তা কর্মকার। তাঁরা ট্রেনে জলের পুরোনো বোতল কুড়িয়ে সেগুলো বিক্রি করে সংসার চালান। সোমবার টাটা স্টেশনের আগে কান্ড্রা স্টেশন থেকে স্বামী স্ত্রী জলের বোতল সংগ্রহ করে পুরুলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন গোমো প্যাসেঞ্জার ট্রেনে। ট্রেনের মধ্যেই তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন বাধ্য হয়ে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে বরাভূম( বলরামপুর) স্টেশনে নেমে পড়েন। জলের বোতল এনে স্ত্রীকে জল খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই সব শেষ। অভিযোগ বরাভূম স্টেশনের রেল কর্মীদের জানানোর পর তারা ওই মৃতদেহ সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দেয়। প্ল্যাটফর্ম থেকে মহিলার দেহ তাঁর স্বামীকেই সরাতে দেখে স্থানীয়রা হস্তক্ষেপ করেন। স্থানীয় মানুষের প্রতিবাদের জেরে এরপর জি আর পি দেহটি ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়। কেন মহিলার স্বামীকে স্ত্রীর দেহ তুলতে হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি প্রায় ছয় ঘণ্টা দেহটি পড়েছিল ষ্টেশনেই। মহিলার স্বামী মনোজ কর্মকার জানিয়েছেন, ‘‘পুরুলিয়া শহরের গোশালার কাছে একটি বস্তিতে থাকেন তাঁরা। ট্রেনে উঠে প্ল্যাস্টিকের বোতল সংগ্রহের কাজ করেন। ট্রেনে করে ফেরার পথে বরাভুম স্টেশনে নেমে যান তাঁরা। এখানেই তাঁর স্ত্রী অসুস্থতার কথা বলেন। এখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।’’
স্থানীয়দের অভিযোগ বহু ক্ষণ স্টেশনে মৃত স্ত্রীর পাশে বসেছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁর স্ত্রীর দেহ ওই ব্যক্তিকেই বয়ে নিয়ে যেতে হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বরাভূম স্টেশনের রেল কর্তৃপক্ষ এবং জিআরপির এই অমানবিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সকলেই।

Comments :0

Login to leave a comment