সংখ্যালঘু বিদ্বেষ উসকানোর ভাষণ দিয়েছেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর যাদব। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়েছে। হাইকোর্টকে বিচারপতির বক্তব্য সম্পর্কে বিশদে তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাকে বিষয়টি নিয়ে চিঠিও দেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাত।
গত রবিবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আইনি সেলের সভা হয় হাইকোর্ট ভবনে। সেখানে যাদবের ভাষণ ঘিরে সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। তাঁকে বিভিন্ন রায় দেওয়ার সময়েও এমন বক্তব্য পেশ করে শোনা গিয়েছে।
৮ ডিসেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভায় তিনি যাবেন কেন উঠেছে সে প্রশ্নই। বৃন্দা কারাত প্রধান বিচারপতিকে বলেছেন, এই সংগঠন নিজের ওয়েবসাইটে নিজের লক্ষ্য জানিয়ে বলে যে ‘হিন্দুসমাজকে সংগঠিত করা, হিন্দু ধর্ম রক্ষা করা এবং হিন্দুসমাজের জন্য কাজ করা।’ কারাত বলেছেন, ‘‘একজন বরিষ্ঠ বিচারবিভাগীয় আধিকারিক এমন ধর্মীয় সংকীর্ণতাবাদী সংগঠনের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন কিনা দেখা দরকার।’
রবিবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভায় আলোচ্য ছিল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, ওয়াকফ বোর্ড সংশোধনী বিল। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সহ আরএসএস-র সব সংগঠনই এই বিষয়গুলিকে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক প্রচার চালায়।
বিচারপতি যাদব বলেন, ‘‘আমার বলতে কোনও দ্বিধান নেই যে এই দেশের নাম হিন্দুস্তান। সংখ্যাগুরুর ইচ্ছে অনুযায়ী চলবে এই দেশ।’’
বিচারপতি আরও বলেছেন, ‘‘এখানে যেসব ‘কাটমোল্লা’ রয়েছে... এই শব্দ ব্যবহার সঠিক নয়... কিন্তু বলার সময় ব্যবহার করতে হচ্ছে কারণ এরা দেশের পক্ষে বিপজ্জনক.. এরা দেশের বিপক্ষে, এরা জনতাকে উসকানি দেয়’।
বিচারপতি বলছেন, ‘‘আপনি আইনজীবী, ব্যবসায়ী বা ছাত্র যা-ই হোন না কেন, প্রথমেই আসবে আপনার হিন্দু পরিচয়। যারা এই দেশকে মাতৃভূমি মনে করে এবং নিজেকে সেই মায়ের সন্তান মনে করে, সে-ই হিন্দু।
বৃন্দা কারতের সঙ্গে বহু অংশই বলেছেন যে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা রয়েছে। সেই সংবিধানকে ঊর্ধ্বে তুলে রাখার শপথ নিয়ে বিচারপতির আসনে বসতে হয়। এলাহাবাদ হাইকোর্টের এই বিচারপতি সেই শপথ ভেঙেছেন। তাঁর ভাষণ ঘৃণা ভাষণের চেয়ে কিছু কম নয়।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিচারপতি শেখর যাদবের ভাষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেখে এই সিদ্ধান্ত।
Supreme Court on hate speech
ঘৃণা ভাষণ বিচারপতির, তথ্য চাইল সুপ্রিম কোর্ট
×
Comments :0