RG Kar Student Death

দাবি না মানলে বৈঠকে নারাজ জুনিয়র ডাক্তাররা

রাজ্য জেলা কলকাতা

RG KAR STUDENT DEATH BENGALI NEWS

পাঁচ দফা দাবিতে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। পুলিশের বাধা টপকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে পৌঁছে যান জুনিয়র ডাক্তাররা। নাছোড় অবস্থানে বসেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামলাতে উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নারায়ণ স্বরূপ নিগম চিকিৎসকদের ই-মেল করে জানান, ‘‘সরকারের শীর্ষ স্তরের আধিকারিকরা আপনাদের সঙ্গে নবান্নে দেখা করতে চায়।’’ সরকারের সেই আপোষের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন হবু চিকিৎসকরা। তাঁদের বক্তব্য, সরকার পাঁচ দফা দাবির মীমাংসা না করা অবধি কোনও আলোচনা নয়। 

প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের প্রধান দাবি, আরজি কর কান্ডের সমস্ত দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা। এর পাশাপাশি আরজি কর কান্ডে প্রমাণ লোপাটে অংশ নেওয়া ও প্রমাণ লোপাটে সাহায্য করা সমস্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে তাদেরও বিচারের আওতায় আনা, কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলের অপসারণ, রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা ও মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ভয়ের পরিবেশ বা ‘থ্রেট কালচার’ কাটিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। 

প্রসঙ্গত, আরজি কর কান্ড সামনে আসার পর থেকে কর্মবিরতিতে নেমেছেন জুনিয়র চিকিৎসক সহ চিকিৎসক সমাজের বড় অংশ। সরকারের তরফে একাধিক বার হুমকি দেওয়া হলেও আন্দোলন থেকে পিছু হঠেননি তাঁরা। তারই মাঝে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়। জুনিয়র চিকিৎসকদের একটা অংশ জানাচ্ছেন, ‘‘সার্বিক ঐক্য দেখে শাসকদল ব্যাকফুটে। মেডিক্যাল কলেজগুলিতে টিএমসিপি’র পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। এই অবস্থায় যে কোনও ভাবে আন্দোলনকে দুর্বল করতে চাইছে সরকার। তাই দাবি না মিটিয়ে নবান্নে বৈঠকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। আমাদের উপযুক্ত মর্যাদা চাই, এবং সরকারকে দাবি পূরণ করতে হবে। একমাত্র তারপরেই আলোচনার দরজা খুলতে পারে।’’

জুনিয়ার চিকিৎসকদের ইতিমধ্যেই কাজে যোগ নিদের্শ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সোমবার  সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর কান্ডের শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, চিকিৎসকদের মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার মৌখিক উপদেশ দিয়েছিলেন।  তারপরেও স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন তাঁরা। দুপুর থেকে অবস্থান কর্মসূচি চলছে। সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীদের কাছে নবান্নে বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য ইমেল আসে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নারায়ণ নিগম ইমেলে করে জুনিয়ার চিকিৎসকদের ১০ জনের একটি প্রতিনিধি দলকে নবান্নে এসে সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করার জন্য আহ্বান জানান।

জুনিয়ার চিকিৎসকরা সোমবার রাতে আলোচনা করে পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবনের অভিযানের ডাক দেন। সেই মতো তাঁরা করুণাময়ী থেকে মিছিল করে স্বাস্থ্য দফতরের দিকে যাওয়া শুরু করেন কিন্তু পুলিশ ১০০ মিটার আগেই তাদের ব্যারিকেড করে আটকে দেয়। জুনিয়ার চিকিৎসকরা সেখানেই শান্তি পূর্ণ ধর্না অবস্থান শুরু করেন। ধীরে ধীরে অন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়তে শুরু করে। তাদের তরফে জানালো হয়, ‘‘আমাদের যদি ভিতরে যেতে না দেওয়া হয় তাহলে লালবাজারের মত এখানেও সারা রাত অবস্থান করবো।’’ কিন্তু সেই পরিস্থিতির মধ্যেই  ইমেল করে জুনিয়ার চিকিৎসকদের নবান্নে বৈঠকে ডাকা হলো। কিন্তু জুনিয়ার চিকিৎসকদের থেকে পাওয়া শেষ তথ্য অনুযায়ী তাঁরা সরকারের সাথে আপোষ করেতে রাজি নন। তাঁরা অন্দোলনের পথে থাকবেন। 

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ‘‘ই-মেলের বক্তব্যে অত্যন্ত অবমাননাকর। সরকার যেন আমাদের নির্দেশ দিচ্ছে, সেই মত আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা এই চোখ রাঙানি মানিনা। সরকারের উচিত দোষীদের শাস্তির বিষয়টি সুনিশ্চিত করা।’’

Comments :0

Login to leave a comment