কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সীমাহীন আকচাআকচিতে শারদোৎসবের কোনও উচ্ছ্বাস নেই তাঁদের ঘরে। একদিকে যখন উৎসবে ফিরেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, ঠিক এই মুহূর্তে ছন্দপতনের বিষণ্ণতা রেগার কাজ না থাকা গ্রামীণ এলাকার মানুষের ঘরে ঘরে। এমন ছবির টুকরো কোলাজ কোচবিহার জেলার প্রায় সমস্ত গ্রামীণ এলাকাতেই।
শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে পরিবারের জন্য নতুন বস্ত্র কিংবা নতুন পোশাক কেনা তো দূর অস্ত, উৎসবের দিনগুলিতে দুবেলা দুমুঠো অন্নের সংস্থান করাটাই এখন চিন্তা জেলার গ্রামীণ এলাকার মানুষের। এক অদ্ভুত খেলায় নেমেছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন তৃণমূল ও আর কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি। একদল বলছে আমরা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কোনও টাকা রাজ্য সরকারকে দেব না, আর আরেক দল বলছে আমরা হিসাব দেব না। আর এই দুই সরকারের আকচাআকচিতে আসলে গ্রাম বাংলার গরিব মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন রেগার কাজ থেকে।
পাড়ায় পাড়ার সার্বজনীন শারদোৎসব কমিটির আয়োজনে আলোকিত হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা। অথচ গ্রামের এই অসহায় মানুষদের ঘরে ঘনীভূত হতাশার অন্ধকার।
শুধু রেগার কাজ বন্ধ থাকাই নয়, ইতিমধ্যে আধার নম্বর আপডেটের নাম করে গোটা কোচবিহার জেলায় প্রায় ৫লক্ষ ৩হাজার ৯৫১জন রেগা শ্রমিকের নাম বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন রেগার কাজ বন্ধ থাকার কারণে কোচবিহার জেলার গ্রামীণ অংশের প্রচুর রেগা শ্রমিক হাতে কাজ না থাকায় পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে চলে গিয়েছেন রাজ্যের বাইরে। এ কারণেই তারা আধার কার্ড জমা দিতে পারেননি। কিন্তু তাদের কোনও সুযোগ না দিয়েই অযাচিতভাবে তাদের নাম জবকার্ড থেকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে বলেও উঠেছে অভিযোগ। এই পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে কোচবিহার জেলায় সীমাহীন অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতার মুখে দাঁড়িয়ে গ্রামীণ অংশের গরিব মানুষ। প্রতিনিয়ত ক্রয় ক্ষমতা কমেছে তাঁদের। আর এর প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। ধাক্কা খেয়েছে শারদোৎসবের বাজারও।
Comments :0